
রোজদিন ডেস্ক,কলকাতা:- অক্ষয় তৃতীয়ায় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা, দ্বারোদঘাটন। জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে অতিথি অ্যাপায়ণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দিলেন, মহাকুম্ভের দুর্ঘটনার কথা। কীভাবে ধর্মের টানে প্রয়াগরাজে ছুটে গিয়ে প্রাণ গিয়েছিল বহু মানুষের। উত্তরপ্রদেশের সেই বেদনাদায়ক স্মৃতি থেকে শিক্ষা নিয়ে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করলেন মমতা।
বুধবার এনিয়ে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি বলেন, “মহাকুম্ভে অনেক লোক মারা গেছে। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হয়।” এই বৈঠক থেকেই একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কি কি নির্দেশ দিলেন মু্খ্যমন্ত্রী একনজরে দেখে নিন:-
- ২৯ তারিখ যজ্ঞ। দায়িত্বে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মুখ্য দ্বৈতাপতি রাজেশ দ্বৈতাপতি ও তাঁর টিম। প্রাণপ্রতিষ্ঠা ৩০ এপ্রিল সকাল ১১টায়। অক্ষয় তৃতীয়ায় দ্বারোদঘাটন। থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী।
- ২৮ এপ্রিলের সন্ধের মধ্যে সকলে পৌঁছে যান। সেদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
- অতিরিক্ত জনসমাগম এড়াতে এবং সকলের কাছে উৎসবের প্রতি মুহূর্তের ছবি পৌঁছে দিতে ব্লকে ব্লকে এলইডি স্ক্রিন লাগাতে হবে।
- দিঘায় তিনটি এয়ার কন্ডিশনার হ্যাঙ্গার। প্রথম হ্যাঙ্গারে ৬ হাজার দর্শকের জায়গা থাকবে। এখানেই হবে মূল পোডিয়াম। হ্যাঙ্গার ২-এ ৪ হাজার দর্শকের জায়গা থাকবে। থাকবে ডিসপ্লে স্ক্রিন। হ্যাঙ্গারে ৩-এ ৩ হাজার দর্শকের জায়গা। এখানেও ডিসপ্লে স্ক্রিন থাকবে।
- যজ্ঞ যেখানে হবে সেখানে জায়গায় কম। অনুমতিপ্রাপ্তরা যেতে পারবেন। জুতো ও মোবাইল নিয়ে যাওয়া যাবে না। ক্লোকরুমে রাখতে হবে।
- শিল্পপতিদের জন্য কনভেনশন সেন্টারে ব্যবস্থা। সেখানেই থাকবেন তাঁরা।
- গঙ্গাসাগরের মতো বিনামূল্যে টেন্ট কটেজ দিঘায়।
- কটেজের দায়িত্বে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের দায়িত্ব। তাঁরা রান্না করে অতিথিদের খাওয়াবেন। ৪-৫টা পদ। খাবারের জন্য টাকা দিতে হবে।
- প্রতি টেন্টের সামনে থাকবে দমকল। দমকলের বাইক রাখা হবে। বড় গাড়ি ২২টা প্রস্তুত থাকবে।
- রেল স্টেশনে যেন পদপিষ্টের কোনও ঘটনা না ঘটে। ভিড় হলে ফাঁকা করে দেবেন।
- হেলথ ক্যাম্প, অ্যাম্বুল্যান্স রাখতে হবে যথেষ্ট পর্যায়ে।
- ভারত সেবাশ্রম সংঘের কাছে ভলান্টিয়ারের জন্য অনুরোধ করা হবে। ক্যাম্প, হোল্ডিং এরিয়ার দায়িত্ব সামলাবেন।
- ২৯ এবং ৩০ তারিখে বয়স্কদের জন্য গ্রিন কার। মন্দিরের সামনে জুতো পরে যাওয়া যাবেনা।
- মুখ্যমন্ত্রী জানান, চাই না বেশি ভিআইপি যাক।যেহেতু হাওড়া থেকে লোকে যাবে। তাই ওখানে ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। সিসিটিভি থাকবে।সমুদ্রে কড়া নজর।
- কলকাতায় থাকবেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অরূপ বিশ্বাস-পুলক রায়-স্নেহাশিস চক্রবর্তী -চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সুজিত বসু আর ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত ২৭ তারিখ থেকে দিঘায় থাকবেন।
এছাড়াও এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনার কথা মে করিয়ে বলেন, “মহাকুম্ভে অনেক লোক মারা গেছে। তাই ট্রাফিক সিস্টেম ভাল করে কোঅর্ডিনেট করতে হবে। এজন্য প্রতিটি জেলায় নোডাল অফিসার রাখতে হবে। দেখতে হবে মানুষের সেফটি সিকিউরিটির বিষয়ে যেন কোনও খামতি না থাকে।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জানান গঙ্গাসাগর মেলার ধাঁচে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে ভক্তদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। যাঁরা গঙ্গাসাগর মেলার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে নিরাপত্তা দেখভালের জন্য। প্রয়োজনে বেসরকারি সিকিউরিটি সংস্থার সহযোগিতাও নেওয়া হবে।
Be the first to comment