সাধারণতন্ত্র দিবসে বাংলার ট্যাবলো বাতিল ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা। একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, নেতাজি ও আইএনএ নিয়ে প্রস্তাবিত ট্যাবলো বাতিলের সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। কোনও কারণ না দেখিয়েই কেন্দ্র ট্যাবলো বাতিল করেছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে বাংলার আপামর জনগণ মর্মাহত বলেও চিঠিতে লিখেছেন মমতা।
চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ভারতের স্বাধীনতায় বাংলার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীরা দেশের জন্য সামনে থেকে লড়াই করেছেন। তাই তাঁদের ট্যাবলো বাদ দেওয়া হলে সেটা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাছে অত্যন্ত অসম্মানজনক হবে। দেশের স্বাধীনতায় নেতাজি, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে বঙ্কিমচন্দ্র, রমেশচন্দ্র দত্তের অবদানও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মমতা। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫-তম জন্মবার্ষিকীকে বাংলার ট্যাবলোর থিম ছিল ‘নেতাজি ও আজাদ হিন্দ বাহিনী’। ট্যাবলোয় শোভা পেত নেতাজির জাতীয় পতাকা উত্তোলন, গান্ধীজি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আজাদ হিন্দ বাহিনীতে তাঁর নানা মুহূর্তের ছবি। সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মৌখিক ভাবে বাংলার ট্যাবলোর প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে কেন্দ্রের তরফে এখনও কোনও চিঠি পায়নি রাজ্য সরকার।
এমনটা যে হতে পারে রাজ্য সেই আভাস আগেই পেয়েছিল। কারণ সাধারণতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে পরপর চার-পাঁচটি বৈঠক হয়ে গেলেও রাজ্যকে একবারও ডাকা হয়নি। তাই ধরেই নেওয়া হয়েছিল, এ বারও সাধারণতন্ত্র দিবসের সকালে দিল্লিতে বাংলার ট্যাবলো থাকবে না। ট্যাবলো বাতিল হওয়া নিয়ে রাজ্যের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এমনটা যদিও প্রথম নয়, ২০২০ সালেও প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে বাংলার ট্যাবলো বাদ পড়েছিল।
নেতাজির ট্যাবলো বাতিল নিয়ে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির পক্ষে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত অসম্মানজনক। আমরা কেন্দ্রের কাছে ফের আবেদন জানাব, যাতে নেতাজিকে নিয়ে বাংলার ট্যাবলো কুচকাওয়াজে জায়গা পায়।’ বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার পালটা জানিয়েছেন, পুরোটাই ঠিক করে বিশেষজ্ঞ কমিটি। কেন্দ্রের তরফে বাংলার ট্যাবলো বাদের বিষয় এখনও জানানো হয়নি।
Be the first to comment