আরও বিপাকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার রাত ৮ টার মধ্যে সিবিআই দফতরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল তাঁকে। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক টেট মামলায় সময়ের আগেই ওএমআর শিট নষ্ট করার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে সদুত্তর দিতে পারেনি পর্ষদ। আর সেই সময় পর্ষদ সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। ওএমআর শিট নষ্ট করার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই এ দিন মানিককে সিবিআই দফতরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, তদন্তে সহযোগিতা না করলে, প্রয়োজনে মানিককে গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও জানিয়েছে আদালত।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ওএমআর শিট নষ্ট করার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে অ্যাড হক কমিটির কী ভূমিকা ছিল, তা খতিয়ে দেখতে মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। বিচারপতির নির্দেশ, যদি তিনি সহযোগিতা না করেন, সে ক্ষেত্রে তাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে তদন্তকারী সংস্থা। একইসঙ্গে সিবিআই খতিয়ে দেখবে মানিক ভট্টাচার্যকে কেন ওই পদে নিয়োগ করা হয়েছিল, কী ভাবে তাঁকে বাছাই করা হয়েছিল।
এক মাসের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ১ নভেম্বর জমা দিতে হবে সেই রিপোর্ট। বিচারপতি এ দিন মন্তব্য করেন, ‘সিবিআই আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে এটা শুধু আদালতই চায় না, নাগরিক সমাজও তাদের ওপরে ভরসা রাখবে বলে আশা করি।’
এ দিকে, মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের মামলার শুনানি। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মানিক। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে মানিক ভট্টাচার্যকে যাতে অপসারণ করা হয়। এ ছাড়া, মানিক ভট্টাচার্য এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির হিসেবও হলফনামা আকারে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকেই মান্যতা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন তিনি। তবে শীর্ষ আদালত থেকে কোনও রক্ষাকবচ না মিললে, তাঁকে মঙ্গলবারই সিবিআই অফিসে হাজির হতে হবে।
মানিকের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা দাবি করেন, মানিক ভট্টাচার্য যে ষড়যন্ত্রের অন্যতম অংশীদার, সেটা বিভিন্নভাবে স্পষ্ট হয়েছে। তিনি মনে করেন, এমন কোনও তথ্য প্রমাণ তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে, যার জন্য বারবার ডানা হচ্ছে তাঁকে।
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ঘরে বসে টাকার লেনদেন করেছেন, তারপরও তিনি বিধায়ক। মানিককে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, টজায়গা তো আছেই, উডবার্ন ওয়ার্ডে গিয়ে শুয়ে পড়ুন।ট গ্রেফতার করে অবিলম্বে শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার দাবি করেন, এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই, আর বিজেপিরও উল্লসিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। সিবিআই তদন্ত নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Be the first to comment