জুলাই মাসে আবার আসব৷ বাবাকে কথা দিয়েছিলেন ছেলে৷ সেই কথা রাখলেন সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তবে বেঁচে নয়, কফিনবন্দি হয়ে ব্যারাকপুর শ্রীপল্লীর বাড়িতে ফিরবেন তিনি৷ মণিপুরের তুপুলে ভয়াবহ ধসে মৃত্যু হয়েছে এ রাজ্যের বহু জওয়ানের৷ শনিবার সকালে সন্তুর মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছয় ব্যারাকপুরের বাড়িতে৷ সেই থেকে শোকের ছায়া এলাকায়৷ কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার৷
নতুন বাড়ি তৈরির স্বপ্ন ছিল সন্তুর৷ টাকাও জমিয়েছিলেন৷ সম্প্রতি বাড়ি তৈরির কাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে৷ নিহত জওয়ানের বাবা গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মাস তিনেক আগে বাড়ি এসেছিল৷ বলেছিল, জুলাই মাসে আসব৷ ঘরগুলোর কাজ শেষ করব৷’ এর মধ্যে বাড়ির কাজ অনেকটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু নতুন বাড়িতে থাকা হল না সন্তুর৷ কাঁদতে কাঁদতে স্ত্রী জয়া বলেন, ‘কত স্বপ্ন ছিল৷ নতুন ঘরে থাকব৷ ঘরের সব কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল৷’
এলাকার মানুষও সন্তুর মৃত্যুর খবরে শোকাহত৷ ভালো ব্যবহারের জন্য সবাই তাঁকে খুব পছন্দ করত৷ পরিবার জানিয়েছে, সন্তুর সেনাবাহিনীকে কাজ করার ইচ্ছা ছিল৷ তাই ২০০৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর আর্মিতে ভর্তি হয়৷ ১০৭ ব্যাটলিয়নে কর্মরত ছিল সে৷ ৬ মাস আগে মণিপুরের তুপুলে তাঁর পোস্টিং হয়৷ শেষ বাড়ি এসেছিলেন ২৪ ফেব্রুয়ারি৷ তারপর ১১ এপ্রিল চলে যান৷ বাবাকে কথা দিয়েছিলেন, জুলাই মাস আসবেন৷ ততদিনে বাড়ির কাজটাও অনেকটা শেষ হয়ে যেত৷ তারপর পরিবারের সঙ্গে নতুন বাড়িতে থাকবেন৷ পরিবারও সন্তুর আসার অপেক্ষায় দিন গুণছিল৷ সন্তু আসছেন ঠিকই৷ তবে এটাই তাঁর শেষ বাড়ি আসা৷
Be the first to comment