ফের মাওবাদী পোষ্টার জঙ্গলমহলে। বাংলা বনধ-এর ডাক দিয়ে, বিনপুর থানার অন্তর্গত কাঁকো অঞ্চলের ভান্ডারপুর গ্ৰামে মাওবাদী পোস্টার দেখা যায় রবিবার সকালে। স্পেশাল হোমগার্ড পদে ‘ক্রিমিনালদের’ চাকরি দেওয়ার প্রতিবাদে এই পোস্টার পড়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির’ অভিযোগও তোলা হয়েছে পোস্টারে। আগামী ৮ এপ্রিল এই নিয়ে বাংলা বনধ-এর ডাক দিয়েছে মাওবাদীরা। কিছুদিন আগেও জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় মাওবাদীদের নামে পোস্টার দেখা গিয়েছে। জঙ্গল মহলে বার বার এই ধরনের পোস্টার পাওয়ার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়ছে। উল্লেখ্য, এর আগেও যখন মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রশান্ত বসু গ্রেফতার হয়েছিল সেই সময়ও বনধের ডাক দিয়েছিল মাওবাদীরা। সেই সময় বনধে ভাল প্রভাবও পড়েছিল জঙ্গলমহলে।
এরপর আবার ৮ এপ্রিল মাওবাদীরা বনধ ডাকায় বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তিত পুলিশ প্রশাসন। জঙ্গলমহল এলাকায় এই বনধের প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে যেমন চর্চা চলছে, সেই সঙ্গে এলাকায় মাওবাদীরা ফের একবার সক্রিয় হয়ে উঠছে কি না, এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। কিছুদিন আগেই নদিয়ার হরিণঘাটা এলাকা থেকে মাওবাদী রাজ্য কমিটির সদস্য জয়িতা দাসকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের অফিসাররা তাঁকে গ্রেফতার করেন। এমনকী উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত এলাকাতেও সাম্প্রতিক অতীতে মাওবাদী পোস্টার দেখা গিয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিলদাতে মাওবাদী পোস্টার দেখা গিয়েছিল। সেই পোস্টার আবার সাধারণত, যেমন লাল কালিতে লেখা মাওবাদী পোস্টার দেখা যায়, তেমন নয়। রীতিমতো ছাপার হরফে প্রিন্ট করা পোস্টার দেখা গিয়েছিল শিলদায়।
রাজ্যে এভাবে একের পর এক মাওবাদী পোস্টার পড়তে থাকায় তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। বিশেষ করে জঙ্গলমহল এলাকা বার বার এমন ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এদিকে সূত্রের খবর, সিআরপিএফ, পুলিশ সহ অন্যান্য ইনটেলিজেন্স ইনপুটে, বার বার মাওবাদীদের সক্রিয়তা বা মাওবাদীদের উপস্থিতির ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। এরই মধ্যে ফের প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতে মাওবাদীদের পোস্টার পড়ল বিনপুরে।
মাওবাদীদের এই পোস্টার প্রসঙ্গে স্থানীয় নেত্রী রেখা সোরেন জানান, ” মূল স্রোতে ফেরানোর জন্যই চাকরি দেওয়া হয়েছে। এখন জঙ্গলমহলে শান্তি বজায় আছে। কিন্তু বিজেপি এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে আবার অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। মাওবাদী বলে এখানে কিছু নেই। এটাও বিজেপির নতুন ধরনের চক্রান্ত।”
অন্যদিকে স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবাশিস কুণ্ডুর বক্তব্য, “আমরা বিগত দিনে যখন সিপিএমের সরকার ছিল, তখনও দেখেছিলাম তৃণমূলের সঙ্গে জনগণের কমিটি বা মাওবাদীর একটা অশুভ আঁতাত ছিল। তৃণমূল সরকার আসার পর হঠাৎ করে আমরা দেখি মাওবাদী উবে গেল। মাওবাদীরা ছিল, মাওবাদীরা এখনও আছে। শুধু গতকাল নয়, বিগত কয়েক মাস ধরেই আমরা দেখছি বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার পড়ছে।”
Be the first to comment