প্রান্তিক শিশুদের নিয়ে পথচলা শুরু করলো ‘মস্তি কি পাঠশালা’

Spread the love

সল্টলেক সেক্টর ফাইভ। সেখানেই কলেজ মোড়ে বন্ধন ব্যাঙ্কের শাখায় কর্মরত ছিলেন বন্দনা প্রভা। কলেজ মোড়ের কাছেই বিভিন্ন ঝুপড়িতে বাস করেন দূর থেকে আসা বিভিন্ন নির্মাণকর্মী ও তাঁদের পরিবার। টাকা রোজগারের জন্য এই সব পরিবারের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদেরও কাজে যেতে হয়। কেউ স্থানীয় কোনও হোটেলে রান্নার কাজ করে, কেউ বা করে চায়ের দোকানে বাসন ধোওয়ার কাজও। রোজ অফিস থেকে ফেরার পথে স্থানীয় এই কচি-কাচাগুলোর সঙ্গে কথা বলতেন বন্দনা। অপরিচিত থেকে তাদের ‘দিদি’ হয়ে উঠতেও বেশি সময় লাগেনি এই যুবতীর। খেলার ফাঁকেই এই বাচ্চাদের জন্য কিছু করার, তাদের শিক্ষার আলোয় আনার কথা মাথায় আসে তাঁর। বন্দনা যুক্ত ছিলেন ‘প্রান্তকথা’ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেন সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে। বন্দনার প্রস্তাবে রাজিও হয় ‘প্রান্তকথা’। স্থানীয় শ্রমিক পরিবারের ২৫টি বাচ্চাকে নিয়ে শুরু হয় বিশেষ ক্লাস। জায়গা না থাকায় প্রথম দিকে রাস্তার ধারে অথবা ঝুপড়িতেই নেওয়া হত ক্লাস। পরে সোহিনী দত্ত নামের বন্ধন ব্যাঙ্কেরই অন্য এক কর্মীর উদ্যোগে, ক্লাসের জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাদের গ্যারেজ ব্যবহারের অনুমতি দেয়। বন্দনার পর প্রীতি নামে প্রান্তকথার আর এক সদস্যা এই ক্লাসের দ্বায়িত্ব নেন। এখন অবশ্য ‘প্রান্তকথা’র একটি টিমের মাধ্যমে এখানে পড়ানো হচ্ছে।

তবে শুধুই পঠনপাঠন নয়, পড়াশোনার পাশাপাশি এইসমস্ত শিশুদের গান, নাচ, হাতের কাজের বিভিন্ন বিষয়েও ক্লাস নেওয়া শুরু হয়। নজর দেওয়া হয় মানসিক উন্নতি, ব্যক্তিত্ব গঠন এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির উপর। আর এই চিন্তা থেকেই ক্লাসের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘মস্তি কি পাঠশালা’। তবে এখন বন্ধন ব্যাঙ্কের গ্যারেজ থেকে সরে সল্টলেক টেকনোপলিসের নয়াপট্টির কাছে চলে এসেছে ‘মস্তি কি পাঠশালা’। কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই প্রান্তকথার উদ্যোগে স্থানীয় তিনটি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। পড়ুয়াদের যাতায়াতের জন্য করা হয়েছে বাসের ব্যবস্থাও।

 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*