কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভয়াবহ আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন

Spread the love
বুধবার সকালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বিধ্বংসী আগুন লাগে। আগুন লাগার ফলে চাঞ্চল্য ছড়ায় মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে।
সকাল ৮ টা ১০ নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের উলটো দিকে একটি ওষুধের দোকানে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের ফার্মেসি বিল্ডিংয়ে। বিল্ডিংয়ের দোতলা ও তিনতলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রোগী ও তাঁদের বাড়ির লোকেরা। আগুন লাগার খবর পেতেই প্রথমে হাসপাতালের কর্মী ও স্থানীয় লোকেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে থাকেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ১০ টি ইঞ্জিন। আসে কলকাতা পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। এসেই তাঁরা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে দেন। ওই ওষুধের দোকান লাগোয়া বিল্ডিংয়ে সেই সময় ভর্তি ছিলেন প্রচুর রোগী। প্রথমে হাসপাতালের কর্মীরা রোগীদের বাইরে বের করে নিয়ে আসার কাজ শুরু করতে থাকেন। তাঁদের সাহায্য করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও রোগীর আত্মীয় স্বজন।
কোনও রকমে কাপড়ে মুড়িয়ে প্রায় ২৫০ রোগীকে বাইরে বের করে নিয়ে আসা হয়। বাইরে এনে তাঁদের শুইয়ে রাখা হয়েছে। কালো ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় অনেক রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে জরুরি বিভাগে। এই আগুন লাগার ফলে কার্যত আতঙ্কিত রোগী ও তাঁদের আত্মীয় পরিজনেরা। রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে হাসপাতাল চত্বরে।
ফার্মেসি লাগোয়া বিল্ডিংয়ের ভেতর থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরাচ্ছে। দমকল কর্মী ও হাসপাতাল কর্মীরা মুখে মাস্ক পরে কাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু এখনও আগুনের উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। গ্যাস কাটার দিয়ে ওষুধের দোকান ও বিল্ডিংয়ের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। দমকলের ডিজি নিজে ঘটনাস্থলে এস পৌঁছেছেন।
দমকল কর্মীদের তরফে জানানো হয়েছে, আরও কিছুক্ষণ লাগবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। ঠিক কী কারণে আগুন লাগল তা এখনও বুঝতে পারছেন না তাঁরা। কিন্তু ওষুধের দোকানে যেহেতু স্পিরিট, অ্যালকোহল প্রভৃতি দাহ্যবস্তু থাকে, তাই আগুন বেশি ছড়িয়ে পড়েছে বলে দমকল কর্মীদের ধারণা।
এ ছাড়াও অনেক রোগীর পরিবারের লোক না থাকায় তাঁদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন অন্য রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা। মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা আপাতত বাইরে বের করে আনা রোগীদের দেখভাল করছেন। এই ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রোগীর বাড়ির লোকেরা।
আগুন লাগার পরেও ফায়ার অ্যালার্ম বাজেনি বলে রোগী ও তাঁদের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ। আগুন লাগার পরে সবার চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ভেতরে এক চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। ফার্মেসি বিভাগে আগুন লাগার ফলে অনেক ওষুধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রায় ১ মাসের ওষুধ মজুত করা ছিল সেখানে। প্রায়ব ৮০ শতাংশ ওষুধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে তাঁদের ধারণা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই নিয়ে বৈঠকে বসেছেন বলে জানা গেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*