জেলার পর এ বার শহরেও আতঙ্ক ছড়াতে হাজির মারণ গেম মোমো

Spread the love

জেলার পর এ বার শহরেও আতঙ্ক ছড়াতে হাজির মারণ গেম মোমো। অজানা নম্বর থেকে মেসেজ আসে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা রাজশ্রী দাসের কাছে। মেসেজে লেখা রয়েছে ‘হাই, ইটস মোমো’। মেসেজ পেয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী রাজশ্রী। জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিসের সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজশ্রীর মোবাইলে এই মেসেজ আসে। আগে থেকে মোমো গেম সম্পর্কে খানিকটা ওয়াকিবহাল ছিলেন তিনি। তাই মেসেজ দেখেই সতর্ক হয়ে যান। কোনও রিপ্লাই করেননি। শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রাজশ্রী। তাঁকে বলা হয় কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করতে। এরপর সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন রাজশ্রী। লালবাজারের তরফে তাঁকে ওই নম্বরটি ব্লক করে দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশ্রী। সত্যিই এটি মারণ গেম নাকি কেবল আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য কোনও বিশেষ চক্র এই ষড়যন্ত্র করছে তা ক্ষতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এর আগে ২১ অগস্ট মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি পি ডি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী কবিতা রায়ের মোবাইলেও একটা অজানা নম্বর থেকে মেসেজ পাঠায় ওই গেমেরই কোনও অ্যাডমিন। তাতে লেখা ছিল ‘হাই আই অ্যাম মোমো’। খেলার জন্য অনুরোধও করা হয় ছাত্রীটিকে। আতঙ্কিত ছাত্রী প্রথমে বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানায়। পরে মোবাইলের স্ক্রিনশট-সহ অজানা নম্বরটি পৌঁছে দেওয়া হয় পুলিশের কাছে। কবিতা জানিয়েছিল, বোনের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার পর মনমরা ছিল সে। তার উপর সবার সামনে তার মাও তাকে চড় মারেন। মায়ের উপর অভিমান করে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেশ কিছুক্ষণ একা সময় কাটায় সে। সেই সময় হোয়াটাস্অ্যাপের স্টেটাস বদলে দেয় কবিতা। নতুন স্টেটাসে রোমান হরফে সে লেখে ‘আমি মরে যাবো’ (Ami More Jabo)। এর খানিক্ষণ পরেই একটি অজানা নম্বর থেকে কবিতার হোয়াটসঅ্যাপে আসে একটি মেসেজ। ওই মেসেজে মোমো গেম খেলার জন্য অনুরোধ করা হয় তাঁকে। শুধু তাই নয়। কবিতার কলেজেরই এক বান্ধবী পর্ণা চক্রবর্তীর কাছেও এই মারণ গেমের লিঙ্ক আসে।

এখানেই শেষ নয়। এরপর ‘মোমো সুইসাইড চ্যালেঞ্জ’ গেমের কবলে পড়ে মেদিনীপুরের এক পড়ুয়া। মেদিনীপুরের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রের নাম সূর্য ধারা। সূর্য জানিয়েছে, দিন চার-পাঁচ আগে মোবাইলে একটি লিঙ্ক দেখে সেটা খোলে সে। ওই লিঙ্কটাই ছিল মোমো খেলার নিমন্ত্রণ। খেলাটি শুরু করে দেয় সূর্য। খেলার তৃতীয় ধাপ অবধি যাওয়ার পরই তার কাছে একটি ভয়েস কল আসে। সেখানে ভয়ের কিছু শুনেই ছাত্রটি তার পরিবারকে সব জানায়। কলের রেকর্ড পাঠানো হয় পুলিশকেও। ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ শুনে তার বাড়িতে যায় পুলিশ। সূর্যের মোবাইল ঘেঁটে লিঙ্কগুলো বার করে সেগুলো ডিলিট করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রটি ওই খেলাতে আরও কয়েকটি স্টেজ এগিয়ে গেলে বিপদে পড়তে পারত।

খেলাটি প্রথম হানা দেয় আর্জেন্টিনায়। একটি বারো বছরের মেয়ের আত্মহত্যা এবং তার সুইসাইড নোটে মোমো চ্যালেঞ্জের উল্লেখ দেখেই প্রথম খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। জানা যায়, মৃত্যুর আগে এই মারণ খেলায় মেতে ওঠে মেয়েটি। মৃত্যুর আগে একটি ভিডিও বানিয়ে সে তার মা, বাবাকে সতর্কও থাকতেও বলে গিয়েছিল। আর্জেন্টিনার ওই ঘটনার পর ক্রমশ মেক্সিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি-সহ একাধিক দেশে মোমো গেমের কথা সামনে আসে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*