দরজায় আটকে গেলো হাত, তবুও চললো মেট্রো; প্রাণ গেলো এক যাত্রীর

Spread the love

মেট্রোর দরজায় হাত আটকে নজিরবিহীন ভাবে এক যাত্রীর মৃত্যু হলো। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সজল কাঞ্জিলাল। তিনি কসবা এলাকার বাসিন্দা। শনিবার সন্ধে ছ’টা চল্লিশ নাগাদ ঘটনাটি ঘটে পার্কস্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পার্কস্ট্রিট স্টেশনে মেট্রোয় উঠতে যাচ্ছিলেন ওই যাত্রী। আর তখনই তাঁর হাত আটকে যায় দরজায়। তিনি বাইরেই ঝুলছিলেন। সেই অবস্থাতেই চলতে শুরু করে মেট্রো। এরই মধ্যে টানেলে ধাক্কা খান সজল। তারপরই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতদেহ এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো চলাচল। আটটা নাগাদ শুরু হয় মেট্রো চলাচল। যদিও মেট্রো রেল কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার পরই চালক ও গার্ডকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এদিন সন্ধে ছ’টা চল্লিশ মিনিট নাগাদ পার্কস্ট্রিট স্টেশনে কবি সুভাষগামী ওই মেট্রো থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখেন যাত্রীরা। তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। থামানো হয় মেট্রো। সেই স্টেশনের বাইরের গেট দিয়ে যাত্রীদের নিরাপদে বাইরে বের করা হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, শর্ট সার্কিটের কারণে ধোঁয়া বেরিয়েছিল কিন্তু পরে জানা যায়, এক যাত্রীর হাত মেট্রোর দরজায় আটকানোর কারণে কামরায় ধোঁয়া দেখা যায়।

তবে ওই মেট্রোয় উপস্থিত অন্যান্য যাত্রীরা বলেন, পার্কস্ট্রিট স্টেশন থেকে মেট্রো ছেড়ে দিয়েছিল। একজন মেট্রোতে উঠতে পারেননি। তাঁর হাত দরজায় আটকে যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর সেই ব্যক্তি থার্ড লাইনে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দেহ জ্বলে যায়। পরে জানা যায় ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। এদিকে ঘটনার পর মেট্রো স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে যাত্রীরা। তারা জানিয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা। মেট্রো কোনওভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। জানা গিয়েছে, ডোর সেন্সর কাজ করেনি বলেই এই বিপত্তি। যাত্রীদের আরও অভিযোগ, মেট্রোর কামরা থেকে কন্ট্রোল রুমে ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে মেট্রো রেল সূত্রে খবর, চালক ও গার্ডকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এদিকে দুর্ঘটনার পরই, ঘটনাস্থলে যান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।

মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ৬.৪৫ নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। কবি সুভাষগামী ট্রেনের দরজা বন্ধ হওয়ার সময় একজন যাত্রী আচমকাই রেকে দৌড়ে ঢুকতে যান। তাঁর শরীর রেকের ভেতরে ঢুকে গেলেও হাতটা বাইরেই থেকে যায়। চালক বুঝতে না পেরে কিছুটা গাড়ি চালিয়ে ব্যাপারটা বুঝেই থামিয়ে দেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই ব্যক্তি মারা যান। তারপরেই গাড়ির পেছনের অংশ দিয়ে যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি সি শর্মা উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*