ভার্চুয়াল কনফারেন্সে অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে ৪৫ নিনিট ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করল মানিকতলা থানা ও কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বিশেষ দল ৷ যেখানে মোট ১২টি প্রশ্ন করা হয়েছে মিঠুনকে ৷ মিঠুনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, উস্কানিমূলক মন্তব্য করতে কেউ তাঁকে বাধ্য করেছিল কি না? এমনই একাধিক প্রশ্ন করা হয় অভিনেতাকে ৷ আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলেও, তদন্তের স্বার্থে পরবর্তী সময়ে ফের বিজেপির এই নেতাকে জেরা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর ৷
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রচার করেছিলেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী ৷ অভিযোগ সেই প্রচারগুলিতে মিঠুন এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক হিংসায় মদত দিয়েছে ৷ মৃত্য়ুঞ্জয় পাল নামে এক ব্যক্তি মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এই মর্মে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ যেখানে বলা হয়েছে, অভিনেতা নির্বাচনী প্রচারে তাঁর সিনেমার কয়েকটি ডায়লগ বলেছিলেন ৷ যার মধ্যে বহুল চর্চিত একটি ডায়লগ ছিল, ‘‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’’ ৷ অভিযোগ এমনই কয়েকটি উস্কানিমূলক ডায়লগ ভোটের ফলপ্রকাশের পর রাজনৈতিক হিংসায় মদত দিয়েছে ৷
মানিকতলা থানায় এই অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী ৷ যেখানে তিনি আবেদনে জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে ৷ তাই এফআইআর প্রত্যাহার করা হোক ৷ কিন্তু, আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি ৷ পাল্টা অভিনেতাকে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট ৷
তার পরেই আজ সকাল ১০টা থেকে ৪৫ মিনিট মিঠুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৷ যে জিজ্ঞাসাবাদের লালবাজারের কয়েকজন আধিকারিকও উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্রের খবর ৷ জানা গিয়েছে, মিঠুনকে মোট ১২টি প্রশ্ন করেছেন তদন্তকারীরা ৷ যেমন, জনসভায় কেন তিনি এই প্রকার মন্তব্য করেছিলেন? কাদের কথায় এই উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন অভিনেতা? কেউ কি তাঁকে এই ধরনের মন্তব্য করতে বাধ্য করেছিল? যদি কেউ তাঁকে বাধ্য করে থাকেন, তবে সেই ব্যক্তি কে? এমনই মোট ১২টা প্রশ্ন করা হয় মিঠুন চক্রবর্তীকে ৷ প্রসঙ্গত, আজকে অভিনেতার জন্মদিন ৷ আর জন্মদিনের সকালে পুলিশি তদন্তের মুখোমুখি হতে হল মিঠুন চক্রবর্তীকে ৷
প্রসঙ্গত, রাজ্যে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা বেড়েছে ৷ শাসক থেকে বিরোধী প্রায় সব দলের নেতা কর্মীরাই কম-বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ৷ এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা পর্যন্ত দায়ের হয়েছে ৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও এই রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল রাজ্যের কাছে ৷ এমনকি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক হিংসার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন ৷ এই পরিস্থিতিতে একাধারে বলিউড তারকা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ, বিরোধী বিজেপিকেই কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷
Be the first to comment