বিধায়ক পদে শপথ নিলেন তৃণমূলের রাজ-সোহম-জুন থেকে বিজেপির হিরণ-সহ ১২ তারকা

Spread the love

সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে বিধায়কদের শপথ গ্রহণ শুরু হল আজ বৃহস্পতিবার থেকে। সেই সূত্রেই শপথ গ্রহণ করলেন ১৪৩ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন শশী পাঁজা, মদন মিত্রর মতো হেভিওয়েট, তেমনই রয়েছে রাজ চক্রবর্তী, জুন মালিয়া, কাঞ্চন মল্লিক, লাভলি মৈত্রের মতো নতুন মুখ। ছিলেন বিজেপির হিরণ চট্টোপাধ্যায়ও।

অতিমারীর জেরেই ২ দিন-ব্যাপী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার বিধায়কপদে ২৯১ জনের শপথ নেওযার কথা। প্রথম দিন, অর্থাৎ আজ শপথ নিলেন রাজ্যের ৮ জেলার ১৪৩ জন বিধায়ক। তার মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবিরের মোট ১২ জন তারকা। উল্লেখ্য, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই এবার প্রথম বিধায়ক হয়েছেন। অন্যবার নৌসর আলি কক্ষে বিধায়কদের শপথ হয়। কিন্তু সেই কক্ষ ছোট। তাই এবার কোভিড বিধি-মাফিক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই অধিবেশন কক্ষে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান চলছে।

বৃহস্পতিবার শপথ নিলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থীদের মধ্যে রাজ চক্রবর্তী, লাভলি মৈত্র, অদিতি মুন্সি, কাঞ্চন মল্লিক, সোহম চক্রবর্তী, জুন মালিয়া, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, মনোজ তিওয়ারি এবং বিদেশ বসু-সহ বীরবাহা হাঁসদা। এঁদের মধ্যে চিরঞ্জিৎ ছাড়া বাকি প্রত্যেকেই প্রথমবারের জন্য বিধায়ক পদে শপথ নিচ্ছেন।

অন্যদিকে, বিজেপির দুই তারকা হিরণ চট্টোপাধ্যায় ও অশোক দিন্দাও রয়েছেন আজকের শপথ গ্রহণের তালিকায়। সবাইকে শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছেন প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, অন্য বার একসঙ্গে তিন বা চারজন বিধায়ক শপথ নিতেন। এবার কিন্তু এক একটি ব্যাচ করে শপথ গ্রহণ হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিধানসভার সচিবালয়। সেই এক একটি ব্যাচে ২০-২৫ বিধায়ক থাকবেন। বৃহস্পতিবার দুই অর্ধে মোট ১৪৩ জন শপথ নিচ্ছেন। তার মধ্যে প্রথমার্ধে (বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা) কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৭৪ জন শপথ নেন। দ্বিতীয়ার্ধে (দুপুর ২টো থেকে ৪টে) হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের ৬৯ জন শপথ নেন।

শুক্রবার প্রথমার্ধে (বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা) পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও নদিয়ার ৭৪ জন এবং দ্বিতীয়ার্ধে (দুপুর ২টো থেকে ৪টে) কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ ও মালদহের ৭৪ জয়ী প্রার্থীরা শপথবাক্য পাঠ করবেন।

শপথ নিয়েই এদিন বারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘এখন প্রথম কাজ করোনা সামলানো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিকরা কাজ করতে জানে। আর অশান্তি হবে না। আমরা সব ঠান্ডা করে দেব। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি শান্ত হতে গেছে।’

অপর তারকা, উত্তরপাড়ার নবনির্বাচিত বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক বলেছেন, ‘জানিনা কোন দিক থেকে কি বল আসবে। তাই আগে শিখে নিই। করোনা নিয়ে আগে কাজ শুরু করব।’

শপথ নেওয়ার আগেই নিজের এলাকায় কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন লাভলি মৈত্র। এদিন শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি বলেন, ‘নিজের এলাকাতেই এখন থাকব। এখন একমাত্র কাজ কোভিড পরিস্থিতি সামলানো।’

অপরদিকে, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয় নিয়ে আক্ষেপ ব্যক্ত করেছেন বিধায়ক ফিরোজা বিবিও। তাঁর কথায়, ‘নন্দীগ্রাম নিয়ে একটা মন খারাপ থেকে গেল। চিটিংবাজটা জিতে গেল। তবে মানুষের জন্যে কাজ একমাত্র মমতা বন্দোপাধ্যায়ই করবেন।’

উল্লেখ্য, এদিন সকাল থেকেই খুশির রেশ বিধানসভা চত্বরে। কেউ ঢুকলেন হাসিমুখে, কেউ বা পাটভাঙা শাড়ি পরে, কেউ ঢুকলেন ধবধবে সাদা পাঞ্জাবিতে। প্রথম দিনে দলের বিধায়কদের বিধানসভায় শুভেচ্ছা জানিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। খুব অল্প সময় থাকলেও, সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “দেখে গেলাম। বিধানসভায় শপথ চলছে। আমি আসব আবার।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*