ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৭০৮ জন এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত এক দিনের মধ্যে এটি রেকর্ড আক্রান্তের ঘটনা। যার ফলে মোট আক্রান্তের ঘটনা বেড়ে হয়েছে ৪২৮১। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১১ জনের। এর মধ্যে ২৮ জনের গত ২৮ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে।
১৪ এপ্রিল লকডাউন উঠলেও তা গোটা দেশে নয়। উঠবে ধাপে ধাপে। খুব তাড়াতাড়ি স্কুল, কলেজ চালু হয়ে যাবে এমনটাও নয়। এমনকি রেল ও বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক হতেও অনেকটা সময় লাগবে। সোমবার মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক শেষে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে।
সোমবার ছিল দেশজুড়ে লকডাউনের ১৪তম দিন। সেদিনই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে আলোচনার মূল বিষয়ই ছিল কীভাবে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা যাবে। এই ব্যাপারে নিজে কোনও সিদ্ধান্ত না জানিয়ে সকলের কাছে মতামত চান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জেলা স্তর থেকে পরামর্শ নিয়ে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোন জায়গার কী অবস্থা রয়েছে এবং লকডাউন ওঠার পরে কী কী ব্যবস্থা করা যাবে সেসব বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এদিন একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, লকডাউন উঠবে ধাপে ধাপে। সেই সঙ্গে চালু থাকবে নানা বিধিনিষেধ।
ওই বৈঠকে হাজির এক মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন জেলা স্তরে প্রশাসকদের সঙ্গে কথা বলে তবেই সকলে পরামর্শ দিন কীভাবে লকডাউন তোলা ঠিক হবে।” দেশে প্রতিদিনই কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে দিল্লির নিজামুদ্দিনের জমায়েত। এখনও পর্যন্ত তবলিঘি জামাতে উপস্থিত সকলের খোঁজ মেলেনি। ফলে তাঁদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন তাঁদের শনাক্ত করার কাজও পুরোপুরি করা যায়নি। এর ফলে লকডাউন তোলা নিয়ে আরও বেশি শঙ্কিত কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন এই বিষয়েও আলোচনা হয়েছে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে।
এদিন দেশের কোথায় কোথায় কৃষিকাজ শুরু করা যায় সে ব্যাপারেও পরামর্শ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে বলেছেন কোথায় কোথায় কলকারখানা খোলা যায় এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রমিকরা কাজ করতে পারবেন সেই পরামর্শও দিতে হবে। সবটাই জানতে হবে জেলা স্তর থেকে। মাথায় রাখতে হবে কোনও কিছু খুলে দেওয়ার জন্য সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।
সূত্রের দাবি, এদিনের আলোচনায় উঠে আসে বন্ধ হয়ে থাকা স্কুল, কলেজ খোলার ব্যাপারও। তবে সে ব্যাপারেও কেন্দ্রের মত, তাড়াহুড়ো করে কিছু করা হবে না। অনেক স্কুলেই গৃহহীনদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। কোথাও কোথাও অভিবাসী শ্রমিকরা রয়েছেন। আবার অনেক স্কুলে কোয়ারেন্টাইনও বানানো হয়েছে। সুতরাং, এখনই স্কুল, কলেজ খোলার কোনও প্রশ্ন নেই। এমনকি লকডাউন উঠে গেলেই দেশে রেল ও বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে এমন ভাবারও কারণ নেই।
সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও পাকা সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। সব প্রস্তাবই রয়েছে আলোচনার টেবিলে। জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
Be the first to comment