সেদিন ছিল ছত্তীসগড়ের প্রথমদফার নির্বাচনের শেষ দফার প্রচার। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী গিয়েছিলেন কাঙ্কেরে জনসভা করতে। সেই সভাতেই রাহুল এনেছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর প্রসঙ্গ। বলেছিলেন, “আমার পরিবারের সঙ্গে ছত্তীসগড়ের মানুষের বহু পুরনো সম্পর্ক। আপনারা তো ইন্দিরা গান্ধীকে জানেন!” ৪৮ ঘণ্টা কেটেছে কি কাটেনি, সেই পরিবার নিয়েই কংগ্রেসের উদ্দেশে কড়া ভাষায় তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সোমবার যেমন ছত্তীসগড়ের ১৮টি আসনে ভোট গ্রহণ চলছে, তেমনই চলছে ২০ তারিখ অনুষ্ঠিত হতে চলা বাকি ৭২টি আসনের ভোট প্রচার। এ দিন বিলাসপুরে জনসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সভা থেকে মোদী বলেন, “ওদের (পড়ুন কংগ্রেসের) রাজনীতি একটা পরিবারে শুরু আবার সেই পরিবারেই এসেই শেষ। আর বিজেপি রাজনীতি শুরু করে গরিবের ঝুপড়ি ঘর থেকে। তার বিকাশ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের নাওয়া-খাওয়া থাকে না।” প্রসঙ্গত রাফায়েল, নোটবন্দি-সহ একাধিক ইস্যুতে কংগ্রেস সভাপতি সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ দিন মোদীও আক্রমণ শানালেন রাখঢাক না রেখেই। বিলাসপুরের সভা থেকে মোদী বলেন, “মা-ছেলে (পড়ুন সনিয়া ও রাহুল) কোটি কোটি টাকা তছরুপে যুক্ত। আর তাঁরা সার্টিফিকেট চাইছে মোদীর কাছে। নোটবন্দিতে কী হলো জবাব চাইছে। আসলে ওদের খুব রাগ হয়েছে। কারণ নোটবন্দির মাধ্যমে ওদের পয়সার জোগান দেওয়া লোকগুলোর হাত থেকে সব টাকা বেরিয়ে গিয়েছে।” সেই সঙ্গে মোদী বলেন, “একটা পরিবারের তিনটি প্রজন্ম দেশকে শেষ করে দিয়েছে। দিল্লি থেকে এক টাকা বের হলে জনগণের কাছে পৌঁছোত ১৫ পয়সা। মাঝে ৮৫ পয়সা লুঠ হয়ে যেত। ওঁর বাবা যা করবেন বলে ভেবেছিলেন আমরা সেটা চার বছরে করে দেখিয়েছি।”
বিরোধীরা বিজেপি-কে কী ভাবে মোকাবিলা করবে তার পথ খুঁজে পাচ্ছে না বলেও দাবি করেন মোদী। বিলাসপুরকে স্মার্ট সিটি করা, কৃষকদের পেনশন দেওয়ার মতো একাধিক জনমুখী প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোদী বলেন, “এতদিন ধরে দেশে শুধু জাতপাত নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। গত চার বছরে বিজেপি নতুন ধারার জন্ম দিয়েছে। একটাই মন্ত্র, বিকাশ-বিকাশ-বিকাশ-আর বিকাশ। চার দিকে বিকাশ। সবার জন্য বিকাশ।”
ছত্তীসগড়ে মাও সমস্যা নিয়ে এ দিনও কংগ্রেসের উদ্দেশে তোপ দাগেন মোদী। বলেন, “যারা নকশালদের জন্ম দিল, লালন করল তারা খতম করবে? আমরাই পারব মাওবাদীদের খতম করতে।”
প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন, “এত রেল লাইন বসছে, আইএইএম-আইআইটি হচ্ছে, এইমস হচ্ছে, জনগণ ভাবেন মোদী এত টাকা কোথা থেকে আনছে। আমি বলি এই টাকা আগেও ছিল। কিন্তু কম্বলের নীচে চাপা ছিল। এই টাকা মোদীর নয়। এ টাকা জনগণের।”
এমনিতেই ১৫ বছর ছত্তীসগড়ে সরকার চালাচ্ছে গেরুয়াবাহিনী। রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া প্রভাব ফেলতে পারে এ রাজ্যের ভোটে। একই চিত্র রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশেও। তাই প্রচারের ক্ষেত্রে উন্নয়নের ফিরিস্তির পাশাপাশি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের টার্গেট করে আক্রমণের কৌশল নিয়েছে ভাজপা।
Be the first to comment