গত ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তারপর থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তে সভা করলেও এই প্রথম বার পূর্ব মেদিনীপুরের মাটিতে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই জেলারই অন্তর্গত নন্দীগ্রাম এবারের ভোটে এপিসেন্টার। যুযুধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই শুভেন্দুকে জেতাতেই নন্দীগ্রামের ‘অপমান’কে হাতিয়ার করলেন মোদি। নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা দেশের কাছে নন্দীগ্রামকে অপমান করেছেন বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার কাঁথির রেলস্টেশনের প্রভূতি মাঠের জনসভায় দাঁড়িয়ে মোদী বলেন, ‘দিদি, আপনি খেলা খেলেন। কিন্তু আমরা কোনও খেলা খেলব না। আমরা মানুষের সেবা করব। বিজেপির রাজনীতির একটাই মন্ত্র, আর তা হল গরিবের রোজগার, গরিবের বাড়ি, গরিবের সম্মান। বাংলার মানুষ দিদির খেলা তাই বুঝে গিয়েছেন।’
এরপরই মোদী তুলে আনেন নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমার দিন মমতার চোট পাওয়ার প্রসঙ্গ। সেই ঘটনায় মমতার অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। সেই প্রসঙ্গ সরাসরি না তুলে মোদি বলেন, আপনারা দেখেছেন, নন্দীগ্রামের বদনাম করার জন্য় একটার পর একটা মিথ্যে কথা বলে চলেছেন। নন্দীগ্রাম আপনাকে অনেক কিছু দিয়েছে। সেই নন্দীগ্রামের মানুষেরই আপনি বদনাম করছেন? পুরো ভারতবর্ষে তাঁদের বদনাম করছেন।’
মোদীর হুঁশিয়ারি, ‘নন্দীগ্রামের মানুষের আত্মাভিমান রয়েছে। নন্দীগ্রামের মানুষ আপনাকে এর জবাব দেবেন। তৃণমূল সরকার হিংসা আর অত্যাচারের সরকার। দিদি গোটা বাংলাকে অন্ধকার দিয়েছেন শুধু। কিন্তু বিজেপির উপর একবার ভরসা রাখুন, বিজেপি সরকার সোনার বাংলা দেবে। আমাদের স্বপ্ন, সোনার বাংলা।’
বিজেপির বাংলার ভোটের ইশতেহার নিয়ে দিন দুই আগেই অসমের প্রসঙ্গ এনে কটাক্ষ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সেই অসমের প্রসঙ্গ টেনেই মমতাকে পালটা কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আপনারা অসমকে দেখুন, উন্নয়নের জোয়ার বইছে সেখানে। জঙ্গিরা পর্যন্ত মূলস্রোতে ফিরছেন। আর দিদি বাংলাকে এমন বানিয়েছেন, যেখানে বোমাবাজিতে বাড়িঘর পর্যন্ত উড়ে যাচ্ছে। মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। দিদি বসে বসে দেখছেন। বাংলার মানুষ শান্তি চায়। বন্দুক, বোমা থেকে মুক্তি চাই। আর বিজেপি সেই কাজটাই করবে।’
রাজনৈতিক মহলের মতে, নন্দীগ্রামে তৃণমূল-বিজেপি উভয়ের কাছেই প্রেস্টিজ ফাইট। শুভেন্দু মুখে যতই মমতাকে পঞ্চাশ হাজারের বেশি ভোটে হারানোর দাবি করতে থাকুন, পরিস্থিতি অতটাও সহজ হবে না। তাই মোদিকেই কাঁথির মাটিতে দাঁড়িয়ে নন্দীগ্রামের জন্য জমি প্রস্তুত করতে হচ্ছে। তার কোনও সুফল আদৌ মিলবে কিনা, তার উত্তর মিলবে ২ মে।
Be the first to comment