দু’দিনের সফরে কলকাতায় এসে বেলুড় মঠে এলেন মোদী। শনিবার রাত ৮-২৫ মিনিট নাগাদ হাওড়ার বেলুড় মঠে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঠের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এদিন বেলুড় মঠে আসার আগে তিনি মিলেনিয়াম পার্ক থেকে হাওড়া সেতুর লাইট অ্যান্ড সাউন্ড বা আলোকধ্বনি প্রকল্পের সূচনা করেন। সেখান থেকে তিনি নদীপথে বেলুড়ে আসেন।
জানা গিয়েছে, মঠের আন্তর্জাতিক অতিথি নিবাসে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় এদিন মোদীর রাত্রিযাপনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। রাতের আহারও মঠেই সারেন তিনি। শনিবার রাতে কলকাতার মিলেনিয়াম পার্ক জেটি থেকে জলপথে গঙ্গাবক্ষে বেলুড় মঠের জেটিতে পৌঁছন নরেন্দ্র মোদী। এদিন জেটিতে নামতেই তাঁকে স্বাগত জানান রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ সহ অন্যান্য মহারাজরা। এরপর রামকৃষ্ণদেবের মূল মন্দিরে গিয়ে প্রণাম করে অধ্যক্ষ মহারাজ স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজের কাছে গিয়ে আর্শীবাদ নেন মোদী। তারপর রাত ৯টা নাগাদ অতিথি নিবাসে গিয়ে ওঠেন তিনি। রাতে প্রসাদী ফল ও মিষ্টি গ্রহণ করেন।
মঠ সূত্রের খবর, রবিবার ভোরে মূল মন্দিরে মঙ্গলারতিতে যোগ দেবেন তিনি। এরপর বিবেকানন্দের আবাসগৃহে গিয়ে ধ্যানে বসবেন। তারপর প্রাতঃভ্রমন সেরে তিনি গেস্ট হাউসে ফিরে যাবেন। এরপর প্রেসিডেণ্ট মহারাজের কাছে গিয়ে তাকে প্রণাম করে বেলুড় মঠের মূল মঞ্চ থেকে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। এবার মোদীর বেলুড় মঠ সফরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার খুঁটিনাটি সবটাই এবার নিয়ন্ত্রণ করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সফরে মূল নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এসপিজি। প্রধানমন্ত্রী কোন পথে আসবেন বা বেলুড় মঠে কতক্ষণ থাকবেন তার পুরোটাই এসপিজির পরিকল্পনা ও নির্দেশ অনুসারেই হচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী বেলুড় মঠে থাকাকালীন কোনও দর্শনার্থীকে মঠের ভিতরে থাকার অনুমতি দেওয়া তো হবেই না, এমনকি সাংবাদিকদেরও মঠ চত্ত্বরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল এদিন।
প্রধানমন্ত্রী জলপথে আসার সূচী থাকায় বেলুড় মঠ থেকে দক্ষিণেশ্বর ও বরাহনগর, কুঠিঘাটের মধ্যে চলাচলকারী লঞ্চ পরিষেবাও নিয়ন্ত্রিত করা হয়। বেলুড় মঠের জেটিতে যাওয়ার রাস্তায় থাকা খাবার ও অন্যান্য জিনিসের স্টলের মালিকদেরও শনিবার সন্ধ্যার আগেই দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ফিরতি পথে যদি সড়ক পথে ফেরেন সেক্ষেত্রেও মঠের কাছে দুদিকে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে ৫ ফুট উঁচু খুঁটি দিয়ে ব্যারিকেড বানানো হয়েছে। জিটি রোড থেকে সোজা বেলুড়মঠ যাওয়ার রাস্তাতেও দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড।
মঠের প্রধান প্রবেশদ্বারের বাইরে ও জি টি রোডে নিরাপত্তায় হাওড়া সিটি পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের কর্মী আধিকারিকরা থাকবেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের নিরাপত্তার দায়িত্বে যেমন রয়েছে এসপিজি, এর পাশাপাশি প্রশাসনের তরফ থেকেও নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। জলপথেও বাড়তি নজরদারি রাখা হয়েছে।
Be the first to comment