মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চন’-এর সম্প্রচারকারী সংস্থা বিবিসি-কে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করা হল। ভারত এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বৈষম্যমূলক’ আচরণ করেছে বিবিসি, এই অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপর তৈরি তথ্যচিত্রটি ভারত এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ‘হিন্দু সেনা’ সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত এবং জনৈক বীরেন্দ্রকুমার সিংহের তরফে সুপ্রিম কোর্টে এই জনস্বার্থ মামলাটি করা হয়েছে ।
দু’দশক আগে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদির জমানায় গোধরা-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া:দ্য মোদি কোয়েশ্চন’-এ।তারপর থেকেই কেন্দ্র বিবিসির তৈরি এই তথ্যচিত্রটি নিয়ে আপত্তি তুলেছে। নিষিদ্ধও করা হয়েছিল তথ্যচিত্রটি। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, এই তথ্যচিত্র ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তৈরি হয়েছে। যদিও বিবিসির দাবি, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। মোদি সরকারের ওই পদক্ষেপকে বিরোধী দলের নেতারা ‘সেন্সরশিপ’ আখ্যা দিয়েছেন।
এবার বিতর্কিত এই তথ্যচিত্রটি পুরোপুরি দেশ থেকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিল কেন্দ্র। এই আবেদনটিকে জরুরি তালিকাভুক্তির জন্য আবেদনকারীদের শুক্রবার আবার তা উল্লেখ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিবিসি এবং এই সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তদন্তের দাবি তুলেও শীর্ষ আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ এই আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি শুরু করেছে।
একই সঙ্গে, দেশে বিবিসি-র তথ্যচিত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেও পাল্টা আবেদন করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার সেই আবেদনের শুনানি শুরু হওয়ার কথা।
কেন্দ্রের তরফে এই তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার পরও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এই তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে। যা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে কেন্দ্রের। এদিকে, বৃহস্পতিবার ব্রিটেনে প্রবাসী ভারতীয়রা বিবিসি এবং ওই তথ্যচিত্রটি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর পর সে দেশের সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ব্রিটেনের জাতীয় সম্প্রচারকারী এই সংস্থা সম্পূর্ণ ভাবে ‘স্বাধীন’।
Be the first to comment