দু’ দিনের ভারত সফরে এসেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ব্রিটিশ হাই কমিশন আগেই জানিয়েছিল, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও মজবুত করাই তাঁর এই সফরের লক্ষ্য। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে জনসন বলেছেন, “দু’দেশের সম্পর্ক উত্তাল সমুদ্রের মধ্যে পথ দেখানোর বাতি।” মোদি ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু বাণিজ্যিক চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মোদি বলেছেন, “আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ঐতিহাসিক ঘটনা।” ব্রিটেনের সহযোগিতায় ভারতে ফাইটার জেট তৈরি হবে বলে ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ভারতের বিদেশনীতির প্রশংসা করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিদেশনীতিই ভারতের পরিচয়।” আজকের বৈঠকে মূলত সামরিক সহযোগিতা, পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত বিষয় এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্বাধীন ও মুক্ত বাণিজ্য পরিস্থিতি বজায় রাখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন “গত বছরেই আমরা কৌশলগত পার্টনারশিপে কাজ শুরু করেছি। স্বাধীন বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা চলছে দুই দেশের মধ্যে।” প্রসঙ্গত, বরিস জনসন চান যেন দীপাবলীর আগেই মুক্ত বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি হয়ে যায় দুই দেশের মধ্যে। ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে যেন কূটনৈতিক সমস্যা না হয়, তা নিয়েও কথা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই উঠে এসেছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ। সেই বিষয়ে মোদি বলেন, আমরা চাই অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ ভাবে যুদ্ধবিরতি হোক ইউক্রেনে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা দরকার বলেই জানান তিনি। ভারতের প্রতিবেশী আফগানিস্তানে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমরা চাই আফগানিস্তানের মাটি থেকে যেন অন্য দেশের উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা না হয়।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, “আজ আলোচনা খুবই ভাল হয়েছে আমাদের মধ্যে। আশা করি এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।” নাম না করে রাশিয়া এবং চিনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন,”গত বছর থেকে স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে। সেই আবহে আমাদের দুই দেশের উচিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দখলমুক্ত রাখা।” আজকের বৈঠকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যৌথ ভাবে বায়ুসেনা এবং নৌসেনার দক্ষতা বাড়ানোর কাজ করবে দুই দেশ। “দেশেই শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে”, জানিয়েছেন বরিস। ভারতের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, “আমি নিজেও ভারতের করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছি এবং তাতে আমার ভালই হয়েছে।”
Be the first to comment