দীর্ঘদিন ধরেই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার ড্রোন বা ‘আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম’ নিয়ে নীতি সংক্রান্ত বৈঠকের পৌরহিত্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, আগামিদিনে কীভাবে সুরক্ষাজনিত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা যায়, তাও বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল। জম্মু বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা এবং জম্মুর আকাশে ড্রোন ধরা পড়ার পর সেই বৈঠকের গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
দিল্লির সেই বৈঠকে যোগ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। সেই বৈঠকে ঠিক কী আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
তবে সূত্রের খবর, ড্রোন বা ‘আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম’ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই সংক্রান্ত জাতীয় নীতি নিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদুড়িয়ার সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাজনাথ। আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ, ড্রোন ব্যবহারের কাঠামো, ভবিষ্যতের ডেলিভারির ক্ষেত্রে কার্যকারিতা, কোন এলাকায় উড়তে দেওয়া হবে এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সেই বৈঠকে আলোচনা হয়।
সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মোদীর পৌরহিত্যে যে বৈঠক হয়েছে, তাতেও আগামিদিনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত এবং নয়া ধাঁচের কৌশল চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার ক্ষেত্রে যে পৃথক নীতির প্রয়োজন আছে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
শনিবার মধ্যরাতে জম্মুতে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছিল। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জম্মু বিমানবন্দরের বায়ুসেনার স্টেশনে দুটি বিস্ফোরক-বোঝাই ড্রোন আছড়ে পড়ে। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুটি বিস্ফোরণ হয়। যা ভিভিআইপি এবং সশস্ত্র বাহিনীর কৌশলগত অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। জোড়া বিস্ফোরণে আহত হন দু’জন বায়ুসেনা আধিকারিক।
পরে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিজি দিলবাগ সিং জানান, জঙ্গি হামলা চালানো হয়েছিল বায়ুসেনার স্টেশনে। তিনি বলেন, ‘আমরা অপর একটি ঘটনায় এক জঙ্গির কাছ থেকে পাঁচ থেকে ছয় কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছি। সেই সব বিস্ফোরক ভারতে আনার নেপথ্যে ছিল লস্কর (লস্কর-ই-তইবা)। এই বিস্ফোরক কোনও জনবহুল এলাকায় রেখে আসার পরিকল্পনা ছিল। এই বিস্ফোরক উদ্ধার করার ফলে অনেক বড় হামলা আটকানো গিয়েছে। এই ঘটনায় আরও সন্দেহভাজনদের শীঘ্রই আটক করা হবে। কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বায়ুসেনা ঘাঁটির বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’
বিশেষজ্ঞরা জানান, জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের শাখা বিস্তারের জন্য ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র, মাদক এবং অর্থ ফেলার ঘটনা ঘটিয়েছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলি। কিন্তু ড্রোনের মাধ্যমে এভাবে দেশের কোনও প্রতিষ্ঠানের উপর হামলার ঘটনা এই প্রথম ঘটল।
Be the first to comment