উত্তর থেকে দক্ষিণ—জেলা ছাড়িয়ে মারণ খেলা ‘মোমো’ এ বার ঢুকে পড়েছে শহরেও। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও স্কুল পড়ুয়া থেকে কলেজ ছাত্রী, তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী থেকে পুলিশ—‘মোমো’ খেলার নিমন্ত্রণ থেকে বাদ যাচ্ছেন না কেউই। খেলার লিঙ্ক বন্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে প্রশাসন। ফেসবুক, টুইটার থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে সতর্ক করছে সিআইডিও। এ বার ঘরে ঘরে সতর্কবার্তা ছড়াতে ফেসবুকে নিজেদের অফিসিয়াল সাইটে ভিডিও পোস্ট করেছে কলকাতা পুলিশও।
কী ভাবে ছড়াচ্ছে ‘মোমো সুইসাইড গেম’-এর লিঙ্ক? কী ভাবে সাবধানে রাখবেন আপনার সন্তানদের? বিপদ বুঝলে কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন? ইত্যাদি নানা বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করে জনগণের সুবিধার জন্যই এই ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে।
জলপাইগুড়ির পি ডি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী কবিতা রায়ের সঙ্গে। তার মোবাইলে ফুটে উঠেছিল ‘মোমো’ খেলার লিঙ্ক। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানায় ছাত্রীটি। কিন্তু, ফের ওই কলেজেরই অন্য এক ছাত্রী পর্ণা চক্রবর্তী একই ভাবে ‘মোমো’ খেলার নিমন্ত্রণ পায়। এরই মধ্যে জানা যায়, মেদিনীপুরের এক ছাত্র ‘মোমো’ খেলা শুরু করেছে। চাইপাট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ওই ছাত্র সূর্য ধারার সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘দ্য ওয়াল’। জানতে পারা যায় খেলার তিনটি স্টেজ অবধি এগিয়ে গিয়েছিল সেই পড়ুয়া। তার মোবাইল থেকে গেমটি ডিলিট করে পুলিশ।
এই সব কিছুর মধ্যেই খবর আসে কার্শিয়াঙের এক ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। সেন্ট আলফাস স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মণীশ সারকিকে সেন্ট মেরি’স হিলের একটি পশু খামারের কাছে ঝুলতে দেখা যায়। ওই খামারের দেওয়ালে আঁকা ছিল ‘মোমো’ খেলা সংক্রান্ত নানা গ্রাফিক্স। আলাদা মনিটরিং সেল তৈরি করে সতর্কতা জারি করে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশও। এর পর ক্রমশ দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে ঝাড়গ্রাম, এমনকি সোদপুরের এক তথ্য প্রযুক্তি কর্মীর কাছে এই খেলার নিমন্ত্রণ আসে। ‘মোমো’ লিঙ্ক দেখে বেশ কৌতুক করে জবাব দেন জলপাইগুড়ি আদালতের মহিলা কনস্টেবল শেফালি রায়।
অতএব, এই খেলা ক্রমশ ছড়াচ্ছে। বর্তমানে ফেসবুকে এই খেলা সংক্রান্ত নানা মিমও চালু হয়ে গিয়েছে। তবে, সব মিলিয়ে সতর্ক থাকাটা প্রয়োজন। বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে, যাদের বিষয়টি নিয়ে অতটা পাকাপোক্ত ধারণা নেই। কারণ, পুলিশ মনে করছে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে প্রাপ্তবয়স্কেরা বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল হলেও শিশুরা এই ফাঁদে পা দিতেই পারে। তাই সব দিক দিয়ে সতর্ক থাকাটা প্রয়োজন রয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ।
Be the first to comment