ব্রততী ঘোষ : ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে বেরহামপুরের দিকে যেতে ৬০ কিমি গেলে টাঙ্গি নামের একটি অখ্যাত জনপদের বিখ্যাত গ্রামের নাম মঙ্গলজোড়ি। আমজনতার কাছে নামটি অপরিচিত হলেও পক্ষীপ্রেমীদের কাছে ওটা স্বর্গরাজ্য। মঙ্গলজোড়ি আসলে চিলকা হ্রদের উত্তর প্রান্তে একটা ঘাস ও জলাজমি সমন্বিত লেগুন। এখানকার জলাজমি, বিভিন্ন খালের মধ্যে দিয়ে আসা চিলকার মিষ্টি জল আর ঘাস-জঙ্গল প্রচুর দেশি-বিদেশি এবং পরিযায়ী পাখিদের বাসস্থানের জন্য আদর্শ করে তুলেছে।
মঙ্গলজোড়ির ভেতরে প্রবেশ করার আগে রাস্তা থেকেই দেখা যায় হাজারো পাখির দল। চেনা-অচেনা, কত না রং-বেরঙের পাখি ও তাদের কলধ্বনিতে এক বিস্ময়কর পরিবেশ। এরপর জেটি থেকে নৌকো ভাড়া করে ভিতরে প্রবেশ অবাক হতে হয় গর্ডউইটের ঝাঁক দেখে। গর্ডউইটের ঝাঁকে নাকি ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ পাখি থাকে। এ ছাড়াও পার্পল মোরেন, হুইসকার্ড টার্ন, ইগ্রেট, জ্যাকনা—কত যে পাখির রকম তা না দেখলে বোঝা যায় না। গহন জঙ্গলে এবার সূর্যাস্তের পালা। এরপর আঁধার হয়ে আসে চারিদিক, পাখিরা আসে নীড়ে, তরী তীরে…।
এই মঙ্গলজোড়িতেই প্রায় ৪-৫ মাস ধরে ১৫০ রকম প্রজাতির কয়েক লক্ষ পাখি বাসা বাঁধে, ডিম পাড়ে, উড়ে বেড়ায়। ভাবতেও অবাক লাগে, স্থানীয় অধিবাসীরা যাঁরা আগে শিকার করে পাখির মাংস খেতেন, তাঁরাই এখন অভিজ্ঞ গাইড। পাখির ডাক শুনে তাঁরা বলে দেন কোন পাখি কত দূরে আছে। এঁদের সঙ্গী করে জলাজমির বিভিন্ন চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে নৌকো করে ঘুড়ে বেড়াতে চাইলে আরও একদিন থাকতে হবে। এলাকার বিভিন্ন জায়গার নতুন পাখিদের বিচিত্র সব খবর ওঁদের মুখস্ত। এত কাছ থেকে এখানে পাখি দেখা যায় যে বড়ো টেলিলেন্স নেই বলে আপনার কোনও আক্ষেপ থাকবে না।
কীভাবে যাবেন/কোথায় থাকবেন : নিকটতম রেল স্টেশন বালাসোর। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে টাঙ্গি হয়ে মঙ্গলজোড়ি। এখানেই গডউইট ইকো কটেজে সুন্দর থাকার ব্যবস্থা। যোগাযোগ- ৯০৫১২১২২২৬/ ৯৯০৩২২৮০০০।
Be the first to comment