দিলীপ-মুকুল সংঘাতে শঙ্কু “ত্রিশঙ্কু”

Spread the love

আজ ৬ সেপ্টেম্বর যুব মোর্চার নব গঠিত কমিটির নির্ধারিত বৈঠক বাতিল হলো। কিন্তু কেন? মাত্র ৭ দিন আগে গত রবিবার প্রকাশিত হয় যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির তালিকা। একথা অনেকেই জানেন যে যুব মরচার রাজ্য কমিটির সভাপতি হয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। এই অবধি ঠিকই ছিল, কিন্তু একসময় তৃণমূল কংগ্রেস করা তরুণ তুর্কি শঙ্কুদেব পণ্ডার এই তালিকায় কোথাও নাম নেই।

তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ সভাপতি হিসাবে শঙ্কু একসময় জোরদার সংগঠন গড়ে তোলেন। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির ছেলে শঙ্কু সংগঠক হিসাবে বিশেষত কলেজগুলিতে ছাত্র সংগঠন গড়ায় মুন্সিয়ানার পরিচয় দেন। তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ সভাপতি হিসাবে শঙ্কুর ডাকে একসময় কানায় কানায় ভরে যেত নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে তাঁর ছিল সুসম্পর্ক। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে পছন্দ করতেন।

এসব এখন ইতিহাস। তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীনই মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। তারপর বিভিন্ন ঘটনা পরম্পরায় শঙ্কু বিজেপিতে যোগদান করেন। এক্ষেত্রেও মুকুল রায়ের হাত ধরেই তাঁর নতুন দলে প্রবেশ ঘটে। সেদিন থেকে বিজেপিতে শঙ্কু মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তৃণমূলের মতো বিজেপির হাই কম্যান্ডের সঙ্গেও শঙ্কু সুসম্পর্ক রেখে চলে। তিনি যে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র লোক সেকথা সকলেরই জানা। শঙ্কু আশা করেছিলেন যুব মোর্চার সাধারন সম্পাদক পদটি তিনি পাবেন। সেই আশায় দিল্লিতে দরবারও করেন তিনি। কিন্তু মুকুল ঘনিষ্ঠ শঙ্কুকে দিলীপ ঘোষ কোনওমতেই কমিটিতে নিতে নারাজ।

একথা অবশ্য মানতে নারাজ দিলীপবাবু। তাঁর সাফ বক্তব্য শঙ্কুর সঙ্গে কথা বলেই যুব মোর্চার রাজ্য কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাবে বলে ওকে রাজ্যে রাখা হয়নি। কিন্তু দিলীপবাবুর পছন্দের প্রকাশ দাস নামের একজনকে সাধারন সম্পাদক করা হয়েছে, যার কোনও পরিচিতি নেই। যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ বলেন কমিটি বদলের সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু দিলীপ ঘোষ কোনোরকম পরিবর্তন চান না। এই দড়ি টানাটানির খেলায় দিলীপ জেতেন নাকি মুকুল? তা এখন দেখার।

যুব মোর্চার সহ সভাপতি হয়েছেন অনুপম হাজরা। এই পদ পেয়ে তিনিও খুশি নন। তাঁরও পছন্দের পদ সাধারন সম্পাদক। শঙ্কুকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি এর কিছুই জানি না। আমি একটি রেজিমেন্টেড পার্টির সদস্য। দলের অনুশাসন মেনে চলি। তৃণমূল কংগ্রেস আমি ছাড়ি নি, আমাকে তারা উচ্ছিষ্ট মনে করেছে। বিজেপি আমাকে কাজের সুযোগ দিয়েছে। এই দলে কাজ করতে পেরে আমি খুশি। তবে শঙ্কু মুখে যাই বলুন না কেন, দিলীপ-মুকুল সংঘাতে বিজেপিতে তাঁর অবস্থা ত্রিশঙ্কুর মতো।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*