মুকুল রায় বিজেপিরই বিধায়ক! দলত্যাগ-মামলায় জানিয়ে দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ

Spread the love

মুকুল রায় দলত্যাগ করেননি। দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে শুক্রবার মুকুল রায়ের দলত্যাগ মামলায় সিদ্ধান্ত জানালেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। কোনও দলত্যাগ হয়নি বলেই এদিন জানিয়ে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, মুকুল রায়ের দলত্যাগ করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ তাঁর হাতে আসেনি। এই দলত্যাগ নিয়ে বারবার বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হলেও, এর সপক্ষে তেমন কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি অভিযোগকারীরা অর্থাৎ অধ্যক্ষের বক্তব্যে স্পষ্ট, মকুল রায় এক দল ছেড়ে অন্য দলে গিয়েছেন, তার প্রমাণ দিতে পারেননি শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী।

শুভেন্দু অধিকারীর একটি ৬৪ পাতার পিটিশন দাখিল ঘিরেই এই মামলার শুরু। গত ১১ জুন এই পিটিশন দেন তিনি। এর পর ১২টি শুনানি হয় এই নিয়ে। এরপরই শুক্রবার অধ্যক্ষ জানিয়ে দিলেন, কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক দলত্যাগ করেননি। বিজেপির তরফ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছিল তা তিনি খারিজ করে দিলেন। যদিও এ নিয়ে বিজেপির তরফে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এর আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টকে প্রমাণ দেখাবেন তাঁরা।

অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মুকুল রায়ের দলত্যাগ সংক্রান্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। অর্থাৎ বিজেপির টিকিটে জয়ী মুকুল রায় যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন এর কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। তাই এই মামলা তিনি খারিজ করে দিচ্ছেন। শুভেন্দু অধিকারী গত বছর ১১ জুন অভিযোগ করেন, বিজেপির টিকিটে ভোটে জিতে বিধায়ক মুকুল রায় শিবির বদলেছেন। তাই তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করতে হবে। এ সংক্রান্ত ৬৪ পাতার পিটিশন দেন।

এরপরই গত ১৬ জুলাই থেকে মামলার শুনানি শুরু হয়। ২৮ জানুয়ারি ১২ নম্বর শুনানি হয়। দু’পক্ষেরই সওয়াল জবাব শোনা হয়। বিজেপির তরফ থেকে অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীর তরফে বারবার বলা হয়, তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল যেসব সোশাল হ্যান্ডেল রয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০২১-এর ১১ জুন তৃণমূল ভবনে দাঁড়িয়ে মুকুল রায় দল পরিবর্তন করছেন। সে সংক্রান্ত ছবি, ভিডিয়ো যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তাকেই হাতিয়ার করেছিল বিজেপি।

কিন্তু মুকুল রায়ের আইনজীবীরা শুনানি পর্বে বারবার দাবি করেন, কোনও দলত্যাগ ঘটেনি। সে সময় মুকুল রায়ের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল। সে কারণেই অন্য একটি রাজনৈতিক দলের দফতরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তা সৌজন্যের কারণে গিয়েছিলেন। কোনও পতাকা তিনি হাতে নেননি।

কিন্তু মুকুল রায়ের আইনজীবীরা শুনানি পর্বে বারবার দাবি করেন, কোনও দলত্যাগ ঘটেনি। সে সময় মুকুল রায়ের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল। সে কারণেই অন্য একটি রাজনৈতিক দলের দফতরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তা সৌজন্যের কারণে গিয়েছিলেন। কোনও পতাকা তিনি হাতে নেননি। বরং বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বিজেপির হয়েই কথা বলেছেন বলেই। এই সমস্ত তথ্য প্রমাণেই মুকুল রায়ের ‘দলত্যাগ’ ঢাকা পড়ে গেল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। অন্যদিকে সূত্রের খবর, বিজেপি এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।

অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন,  “পিটিশনার যথার্থ তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে পারেননি।” এই মামলায় ৩৫ পাতার রায় দেন অধ্যক্ষ। এ বিষয়ে তৃণমূলের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অধ্যক্ষের রায়কে মেনে নিতে হবে। অধ্যক্ষ সবদিক বিবেচনা করে রায় দিয়েছেন। তাঁর রায়কে সমর্থন করি।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*