সাক্ষাৎকারে আছেন, আদালতে নেই; মুকুলের অসুস্থতায় প্রশ্ন হাইকোর্টের

Spread the love

 গাড়িতে বসে বহাল তবিয়তে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিতে পারেন ৷ অথচ আদালতকে নিজের বক্তব্য জানাতে হলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ! মুকুল রায়ের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বিধায়ক হওয়ার পর দল বদল করেও বিধানসভার পিএসি পদে নিযুক্ত হয়েছেন মুকুল ৷ শাসকদলে থেকে এমন দায়িত্ব প্রাপ্তি নজিরবিহীন বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত ৷

বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের ডিভিশন বেঞ্চে ৷ কিন্তু মুকুল রায়ের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল অসুস্থ ৷ তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷ তাই মামলার শুনানি দু-তিন সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান তিনি ৷ তখনই মুকুলের গাড়িতে বসে সাক্ষাৎকার দেওয়ার বিষয়টি সামনে আনেন মামলাকারীর আইনজীবী ৷ সেকথা শোনার পর মুকুলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিও ৷ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী শুক্রবার ৷

কয়েক বছর বিজেপি-তে কাটানোর পর গত ১১ জুন ফের তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরেন মুকুল রায় ৷ ততদিনে তিনি বিজেপি-র বিধায়ক ! এদিকে, প্রথা মাফিক, বিরোধী দলের কোনও বিধায়কই বিধানসভার পিএসি পদে বসেন ৷ মুকুলের ক্ষেত্রে সেই ঐতিহ্য খাটেনি ৷ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার পরই গত 24 জুন এই দায়িত্ব পান তিনি ৷ তাঁর এই পদপ্রাপ্তির বিরোধিতায় এবং তাঁকে পদচ্যুত করার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় ৷ এদিন তাঁর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য আদালতকে জানান, আদালতে মামলার সময় বলছেন অসুস্থ। অথচ, গাড়িতে বসে সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে সমস্যা হচ্ছে না মুকুলের ! মামলার শুনানি এইভাবে পিছিয়ে দেওয়া যায় না । এই বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি ৷

মামলাকারীর অভিযোগ, মুকুল রায় ইচ্ছাকৃতভাবেই নিজের বক্তব্য জানাচ্ছেন না ৷ কারণ, তিনি মামলা পিছিয়ে দিতে চান ৷ তাঁকে যাতে পিএসি-র পদ হারাতে না হয়, তার জন্যই এই প্রচেষ্টা বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে মামলাকারীর তরফ থেকে ৷ রাজ্য সরকার অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে নারাজ ৷ তাদের যুক্তি, পিএসি পদে কাকে বসানো হবে, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বা স্পিকার ৷

অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের বক্তব্য ছিল, সংবিধানের ২১২ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিধানসভায় চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী অধ্যক্ষ ৷ আদালত তাঁর এমন কোনও সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না ৷ এমনকী, এই ধরনের জনস্বার্থ মামলা যাতে আদালত গ্রহণ না করে, রাজ্যের তরফে তেমন আবেদনও করা হয় ৷ যদিও কলকাতা হাইকোর্ট এখনও সেই পথে হাঁটার কোনও লক্ষণ দেখায়নি ৷ আগামী শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন করা হয়েছে ৷

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*