ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুকুল রায়ের দলত্যাগ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। সোমবার এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে সুত্রের খবর ফের একবার শীর্ষ আদালতেও মুকুল রায়ের আইনজীবী জানান, ‘তিনি অন্য রাজনৈতিক দলের মঞ্চে সৌজন্যের খাতিরে গিয়েছিলেন। তিনি কোনও রাজনৈতিক দল যোগ দেননি। মুকুল বিজেপিতেই আছেন। বিজেপি ও মুকুল রায়কে সাসপেন্ড করেননি অর্থাৎ তিনি কখনই তৃণমূলে যোগ দেননি। সে ক্ষেত্রে তাঁর দল পরিবর্তনের কোনও প্রশ্নই আসছে না।’
মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ কী খারিজ হয়ে যাবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য–রাজনীতিতে। তবে শীর্ষ আদালতের জানানোর পর আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর আগেও বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনজীবীর হাতে চিঠি পাঠিয়ে মুকুল রায় জানিয়েছিলেন, তিনি এখনও বিজেপিতেই আছেন। কোনওদিন তৃণমূলে যোগ দেননি। পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে আগেই দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার দাবি তুলেছিল বিজেপি।
প্রসঙ্গত, মুকুল রায় তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। বিজেপির টিকিটে তিনি কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন। এরপরই রাজনীতিক ময়দান দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। নির্বাচনে বিজেপি ধরাশায়ী হতেই মুকুলের ঘরওয়াপসি হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে পুত্র শুভ্রাংশুকে নিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি। ফল ঘোষণার পর কিছুদিনের মধ্যে তৃণমূল ভবনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল। এরপরই মুকুলকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। বিজেপি বিধায়ক হিসেবে তৃণমূলের সমর্থনে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদে বসায় আপত্তি তোলে বিরোধী শিবির। মুকুলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের দাবি নিয়ে আদালতে যায় বিজেপি। PAC-র চেয়ারম্যান পদে মুকুলের নিয়োগ ‘অবৈধ’ দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থও হন শুভেন্দু অধিকারী। মামলাটি করেন কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। সেই মামলার প্রেক্ষিতে মুকুলের দলত্যাগের বিষয়ে স্পিকারকে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছিল হাইকোর্ট। কিন্তু, বিধানসভা সংক্রান্ত বিষয়ে স্পিকারের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করা যায় না বলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment