মুকুল রায়ের পদ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল এই পিটিশন নিয়ে তারা কোনও পদক্ষেপ করছে না। বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি বিআর গওইয়ের বেঞ্চের পরামর্শ, অধ্যক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে হাইকোর্টে যেতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। দুই বিচারপতির বেঞ্চ এদিন বলে, যেহেতু এই রিট পিটিশনের সঙ্গে মুকুল রায়ের পিএসির চেয়ারম্যান পদে থাকা বা না থাকা সম্পর্কযুক্ত, তাই হাইকোর্ট যেন এই মামলার নিষ্পত্তিতে এক মাসের বেশি সময় না নেয়।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা পিটিশন খারিজ করে দেন। জানিয়ে দেন, মুকুল রায়ের কোনও দল বদল হয়নি। তিনি বিজেপিতেই আছেন। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেন শুভেন্দু অধিকারী।
কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে একুশের বিধানসভা ভোটে লড়েছিলেন মুকুল রায়। বিজেপির টিকিটে লড়ে ভোটে জয়ীও হন তিনি। ২ মে ভোটের ফল প্রকাশ হয়। এরপরই গত ১১ জুন মুকুল রায় এবং শুভ্রাংশু রায় তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। একইসঙ্গে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদেও বসানো হয় মুকুল রায়কে। রেওয়াজ অনুযায়ী এই পদে বসেন বিরোধী দলের কোনও বিধায়ক। এখানেই আপত্তি তোলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য ছিল, বিজেপি ছেড়ে মুকুল রায় তৃণমূলে গিয়েছেন। তাই মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ হওয়া দরকার। একইসঙ্গে পিএসির চেয়ারম্যান পদ থেকে মুকুল রায়কে সরানোর দাবিও তোলেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারী গত বছর ১১ জুন অভিযোগ করেন, বিজেপির টিকিটে ভোটে জিতে বিধায়ক মুকুল রায় শিবির বদলেছেন। তাই তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করতে হবে। এ সংক্রান্ত ৬৪ পাতার পিটিশন দেন বিধানসভায়। গত ১৬ জুলাই থেকে মামলার শুনানি শুরু হয়। ২৮ জানুয়ারি ১২ নম্বর শুনানি হয়। দু’পক্ষেরই সওয়াল জবাব শোনা হয়। শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীর তরফে বারবার বলা হয়, তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল যেসব সোশাল হ্যান্ডেল রয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০২১-এর ১১ জুন তৃণমূল ভবনে দাঁড়িয়ে মুকুল রায় দল পরিবর্তন করছেন। সে সংক্রান্ত ছবি, ভিডিয়ো যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তাকেই হাতিয়ার করেছিল বিজেপি।
যদিও মুকুল রায়ের আইনজীবীরা শুনানি পর্বে দাবি করেন, কোনও দলত্যাগ ঘটেনি। সে সময় মুকুল রায়ের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা থাকার কারণে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের দফতরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তা সৌজন্যের কারণে গিয়েছিলেন। কোনও পতাকা তিনি হাতে নেননি। এরপরই ১১ ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় চূড়ান্ত রায়ে জানান, মুকুল রায়ের দলত্যাগ সংক্রান্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। অর্থাৎ বিজেপির টিকিটে জয়ী মুকুল রায় যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন এর কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। তাই এই মামলা তিনি খারিজ করে দিচ্ছেন। এরপর শুভেন্দু সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। এবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল এ সংক্রান্ত যা বক্তব্য হাইকোর্টে জানাতে।
Be the first to comment