পশ্চিমবঙ্গে প্রত্যেকদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষত চার জেলায় সর্বাধিক সংক্রমণ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাই এবার জরুরি ভিত্তিতে নোডাল অফিসার নিয়োগ করল রাজ্য সরকার।
সোমবার সেই বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া ও দুই ২৪ পরগণার ক্ষেত্রে এই নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে।
কলকাতার জন্য নিযুক্ত হয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগণার জন্য মনোজ পন্ত, দক্ষিণ ২৪ পরগণার জন্য নবীন প্রকাশ ও হাওড়ার জন্য রাজেশ পাণ্ডে নিযুক্ত হয়েছেন।
বাংলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রবিবারের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার ছড়িয়ে গিয়েছে। শনিবার থেকে রবিবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের৷ ফলে এই পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩২ জন৷ শনিবার এই সংখ্যাটা ছিল ৯০৬ জনে। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সোমবারের বুলেটিন প্রকাশিত হয়নি।
আক্রান্ত ও মৃতের পাশাপাশি অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। একদিনে ৬২২ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। ফলে এই পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৮,৫৮১ জন৷ শনিবার ছিল ১৭,৯৫৯ জন। ফলে ৬৩.১১ শতাংশ থেকে কমে হল ৬১.৯০ শতাংশ৷ যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, এদের মধ্যে কলকাতারই ১৩ জন ৷
উত্তর ২৪ পরগনার ৩ জন৷ দক্ষিন ২৪ পরগনার ৪ জন৷ হাওড়া ২ জন৷ পশ্চিম মেদেনীপুর ২ জন৷ মুর্শিদাবাদ ১ জন৷ দার্জিলিং ১ জন৷ শনিবার একদিনে মৃতের সংখ্যাটা ছিল ২৬ জন৷ তাদের মধ্যে কলকাতারই ১৬ জন৷ উত্তর ২৪ পরগনার ৫ জন৷ হাওড়া ৪ জন৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১ জন৷ বাংলায় নতুন করে টেস্ট হয়েছে ১১,৭০৯ টি৷
তবে এই পর্যন্ত মোট টেস্ট হয়েছে ৬ লক্ষ ১৭ হাজার ০৭৯ জনের৷ প্রতি মিলিয়নে টেস্ট ৬,৮৫৬ জন৷ যা শতাংশের হিসেবে ৪.৮৬ শতাংশ৷ এই মুহূর্তে সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যে ৫২টি ল্যাবরেটরিতে করোনা টেস্ট হচ্ছে৷ আরও ১টি ল্যাবরেটরি অপেক্ষায় রয়েছে৷ বাংলায় ৮০ টি সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যা তৈরি করা হয়েছে ৷
সোমবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে রাজ্যের এক আমলার। হুগলিতে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে কর্মরত ছিলেন ৩৮ বছর বয়সী ওই ডব্লিউবিসিএস অফিসার। সোমবার সকালে শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে মৃত্যু হয় তাঁর।
ওই আধিকারিক, দেবদত্তা রায় ২০১০ সালের ডব্লিউবিসিএস আধিকারিক। হুগলি জেলাশাসকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেকের বেশি তিনি অসুস্থ ছিলেন। এর পর কলকাতায় তিনি কোভিড পরীক্ষা করান। সেই রিপোর্ট পজিটিভ হয়। জেলাশাসকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমের লিচুবাগানে বাড়ি দেবদত্তা রায়ের। কোভিড পজিটিভ হওয়ার পর তিনি প্রথমে হোম আইসোলেশনেই ছিলেন।
কিন্তু বাড়িতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। দেবদত্তার পরিবারের কাছ থেকে জেলাশাসকের দফতরে জানানো হয়েছিল যে তিনি কলকাতার কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সেখানে ভর্তি হতে পারেননি। এর পর রবিবার বিকেলে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় তাঁকে হুগলির শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
Be the first to comment