বিশ্ব বাণিজ্য শিল্প সম্মেলনের আগে রাজ্যের নজরে এবার শিল্পের জন্য পড়ে থাকা অব্যবহৃত পরিত্যক্ত জমি। পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনা। এই ৭ জেলার জেলা শাসকদের পরিত্যক্ত জমি দ্রুত সার্ভে করার নির্দেশ। দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটিলতায় পড়ে রয়েছে এই জমিগুলি। এবার এই জমিগুলিকে সার্ভে করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
নবান্ন সূত্রে খবর, এইভাবে কয়েক’শো একর জমি “পরিত্যক্ত” অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। সেই জমিগুলিতে নতুন করে কোনও শিল্প বা শিল্পপার্ক তৈরি করা যায় নাকি সে দিকেই নজর নবান্নের। বিশ্ব বাণিজ্য শিল্প সম্মেলনের আগেই এই জমিগুলিতে নতুনভাবে শিল্প তৈরি করাই এখন টার্গেট রাজ্যের। সেই কারণেই দ্রুত সার্ভে করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই সাত জেলাকে। নবান্ন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
সামনেই বিশ্ব বাণিজ্য শিল্প সম্মেলন রয়েছে। সেই বিশ্ব বাণিজ্য শিল্প সম্মেলনের জন্য ল্যান্ড ব্যাঙ্কের বিষয়টি ফের নজরে রাখছে রাজ্য সরকার। যদিও আগে থেকেই একটি ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরি করা রয়েছে, কিন্তু আরও জমির প্রয়োজন রাজ্যের। সেই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে, আইনি জটিলতায় পড়ে রয়েছে এমন জমিগুলি, যেগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, সেগুলিকে দ্রুত চিহ্নিত করার কথা বলা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। নবান্ন সূত্রে খবর, একটি প্রাথমিক সার্ভে রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে, যাতে দেখা গিয়েছে প্রায় কয়েকশো একর জমি এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এবার তাঁর সরকারের লক্ষ্য আরও শিল্প ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রীর গলায় এই কথা শোনা গিয়েছে। রাজ্যের শিল্পবিমুখ যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়ে রয়েছে, তা ঘোঁচাতে তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই শিল্পের জন্য জমি প্রসঙ্গে বিরোধীরা খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না। সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন প্রত্যেক ব্লকে শিল্পতালুক হবে। ১১বছর পর পরিত্যক্ত জমির কথা মনে হল? সে আছে? তোলাবাজিতে চলে গিয়েছে। যদি উদ্ধার করতে পারেন তো ভাল। কিন্তু পরিতক্ত বলে বনের জমি, খেলার মাঠে যেন হাত না দেয়। সরকার চিটফান্ডের জমিগুলি পুনরুদ্ধার করুক বা কিনে নিক।”
রাজ্যের শিল্প টানার প্রয়াস সম্পর্ক কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি শিবিরও। বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “কত বিনিয়োগ হয়েছে বলুন। মুখ্যমন্ত্রী ক’টা নারকোল ফাটিয়েছেন, বাম সময় থেকেও খারাপ, সমস্ত ট্রাম থেকে সব বেঁচে দিচ্ছেন। উৎপাদন নিম্ন। আর সাধারণ মানুষকে তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা। শিল্পায়ন সম্পূর্ণ ব্যর্থ।”
Be the first to comment