কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া হোক বা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া,-ইদানীং বারবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে। প্রকাশ্যে না হলেও চুক্তিতে শিক্ষা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে তৃণমূলের মধ্যেই। এমনকী যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া জেলার পর্যবেক্ষক হওয়া সত্ত্বেও সেই জেলা থেকেও দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া জেলায় চুক্তিতে শিক্ষা কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা নিয়ে খোদ অভিষেকও অসন্তুষ্ট।
সার্বিক এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার মন্ত্রীদের নিয়ে নবান্নের সভাঘরে ডাকা এক বৈঠকে তাঁর অসন্তোষ গোপন করলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষা দফতরের পদস্থ সব আমলা এবং অন্য মন্ত্রীদের সামনেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা দফতর বাস্তু ঘুঘুর বাসা হয়ে গিয়েছে! শিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব অরুণ সেনগুপ্ত কিছু একটা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়েছিলেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর মুখ্য সচিব মলয় দে-র দিকে তাকিয়ে বলেন, আপনি ব্যাপারটা দেখুন। শিক্ষা দফতরের সব অফিসারদের ডেকে আপনি মিটিং করে একটা ব্যবস্থা করুন।
শিক্ষামন্ত্রীও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তার পরেও মুখ্য সচিবকে বিহিত করতে বলার মধ্যে বার্তাটা স্পষ্ট বলেই অনেকেই মনে করছেন।
এমনিতে শিক্ষা দফতরে পার্থবাবুর রোজ যাওয়ার সুনাম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে শিক্ষা দফতরের কর্তাদের মাঝে সাঝেই তিনি নাকতলার বাড়িতে ডেকে পাঠান। সম্প্রতি কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে সিন্ডিকেট চক্রের অভিযোগ এবং অব্যবস্থার সময়েও তাঁর প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর অনাস্থা প্রকট হয়ে গিয়েছিল। কারণ, পরিস্থিতি সামাল দিতে তখন কলেজে কলেজে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পার্থবাবুকেও একাধিক কলেজে পাঠিয়েছিলেন।
তৃণমূলের এক উপরের সারির নেতার কথায়, এর মানে এই নয় যে পার্থবাবুকে শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব থেকে সরাবেন মুখ্যমন্ত্রী। পার্থবাবু স্বমহিমায় শিক্ষা দফতরেই থাকবেন। দলে তাঁর মর্যাদার কারণেই তাঁকে একটা বড় দফতরের দায়িত্ব দিয়ে রাখা ছাড়া উপায় নেই। তবে আগামী দিনে মুখ্য সচিবই যে দফতরের সচিব ও কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দিকনির্দেশ করবেন তার ইঙ্গিত এ দিন পাওয়া গেল।
Be the first to comment