গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা ২,৭৮৩। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। করোনার দ্বিতীয় এই ঢেউয়ের মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে চলছে নির্বাচনী তৎপরতা, তার মাঝে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতাল-স্বাস্থ্য পরিকাঠামো থেকে শুরু করে সরকারি দপ্তরে হাজিরা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগের মতোই ফের কড়াকড়ি করতে চলেছে রাজ্য।
সূত্রের খবর, গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যে ভূমিকা নিয়েছিল, সেই দিশাই দিতে চাইছে স্বাস্থ্য দপ্তর। একই ভাবে, সুরক্ষাবিধির স্বার্থে রাজ্য সরকারি কর্মীদের করোনা কালে যে ভাবে ৫০ শতাংশ হাজিরার হার নির্ধারিত হয়েছিল, আবার সেই পথেই হাঁটবে নবান্ন।
ইতিমধ্যেই কৃষি-সেচ সহ কয়েকটি দপ্তর ৫০ শতাংশ হাজিরার নির্দেশ জারি করেছে। আগামী দু’দিনের মধ্যেই নবান্ন থেকে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ভাবে নির্দেশ জারি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত।
কলকাতা হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষও চলতি পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, লকডাউন চলার সময় যে ভাবে নির্দিষ্ট সংখ্যক মামলা তালিকাভুক্ত করে আদালতে আইনজীবীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল, আগামী ১২ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্তও সেই ব্যবস্থাই বলবৎ থাকবে। শুধু কলকাতা হাইকোর্ট নয়, আন্দামান এবং জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চেও এই নির্দেশ জারি থাকছে। কোভিডের বাড়াবাড়িতে একতরফা শুনানি না-করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের আইনজীবীরাও। তাঁরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ৫ জন আইনজীবী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ব্যাঙ্কশাল আদালতেও এক বিচারক ও তাঁর পেশকার করোনা আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। আদালত বন্ধ হবে কি না, তা নিয়ে আজ, শুক্রবার মুখ্য বিচারকের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন আইনজীবীরা।
চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই স্বাস্থ্যভবনে করোনা মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম চাঙ্গা করার নির্দেশ জারি হয়েছে। বুধবার বিভাগীয় সিনিয়র অফিসারদের নেতৃত্বে ন’টি বিশেষ সেল বানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব।
বৃহস্পতিবার সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতাল কোভিড হাসপাতাল হিসাবে চিহ্নিত করা, পর্যাপ্ত সংখ্যায় বেড, ডাক্তার, চিকিৎসাকর্মী ও সরঞ্জামের বন্দোবস্ত করার তৎপরতা শুরু হয়েছে। এদিন স্বাস্থ্য দপ্তরের কমিশনার একটি নয়া নির্দেশ জারি করে জানিয়েছেন, ‘হালে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য ভবন, গ্রন্থাগার ভবন ও স্বাস্থ্যসাথী ভবনে বেশ কয়েকটি সেল বানানো হয়েছে। সেগুলির কাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, সেদিকে নজর রেখে বিদ্যুৎ সরবরাহ, গাড়ি, মাস্ক, স্যানিটাইজার, খাবার ও অন্যান্য পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কয়েকজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ছুটির দিনেও যাতে কাজে কোনও অসুবিধা না-হয়, তাও নিশ্চিত করতে হবে।’
Be the first to comment