রাশিয়ার সেনা অভিযানে কার্যত বিপর্যস্ত ইউক্রেন। প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় আটকে রয়েছেন সেখানে। রয়েছেন বাংলার বহু মানুষ। কেউ ডাক্তারির, কেউ কম্পিউটারের ছাত্র। তাঁদের জন্য রাতের ঘুম উড়েছে পরিবারের। তাঁদের ফেরাতে তৎপর হল রাজ্য সরকার। নবান্নের তরফে চালু করা হল হেল্পলাইন নম্বর। বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। কারা আটকে রয়েছেন, তাঁদের তালিকা তৈরিতেও উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। ভারতীয়দের ফেরাতে তৎপর কেন্দ্রও। তবে, বিমান চলাচল স্বাভাবিক নয় বলে বাধা তৈরি হচ্ছে।
ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। সেই কারণে অনেকেই মেডিক্যাল পড়তে পাড়ি দেয় ইউক্রেনে। এ রাজ্যের একাধিক জেলার পড়ুয়ারা তাই আটকে রয়েছেন সেখানে। পরিবারের সঙ্গে ফোনে বা ভিডিয়ো কলে যোগাযোগ হলেও, তাঁদের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গিয়েছে। বেশিরভাগ পড়ুয়াই জানিয়েছেন, তাঁদের খাবার ও জলের সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। এরই মধ্যে রুশ সেনা যে ভাবে ইউক্রেনের একের পর এক প্রদেশে অভিযান চালাতে শুরু করেছে, তাতে কতদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।
ইউক্রেনে এ রাজ্যের কতজন বাসিন্দা আটকে আছেন, তা নিয়ে প্রত্যেকটি জেলার কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে নবান্ন। ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন, এমন কোনও বাসিন্দার খবর যদি জেলা প্রশাসনের হাতে আসে, তাহলে সেই সংক্রান্ত খবর সঙ্গে সঙ্গে নবান্নে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ঠিকানা, বর্তমানে তাঁরা কোথায় রয়েছেন, পাসপোর্ট নাম্বার, ও যোগাযোগের নম্বর জানানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। প্রতিটি জেলার জেলাশাসককে এই বিষয় দ্রুত তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
রাজ্যের কতজন আটকে আছে সেই তথ্য নিয়ে তালিকা তৈরি করার পাশাপাশি কেন্দ্রের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে রাজ্য। দিল্লিতে রাজ্যের তরফে যে রেসিডেন্ট কমিশনার রয়েছেন, তাঁকে কেন্দ্রের বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখবেন তিনি।
ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলার নাগরিক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর। এই কন্ট্রোলরুম সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত কাজ করবে। দুটো শিফটে কাজ হবে এই কন্ট্রোল রুমে। যে দুটি নম্বরে যোগাযোগ করার কথা বলা হয়েছে, সেগুলি হল, ২২১৪৩৫২৬ ও ২২১৪১০৭০। একজন উচ্চপদস্থ আইএএস আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কন্ট্রোল রুমের। পাশাপাশি ইবিসিএস আধিকারিকরা সাহায্য করবেন তাঁকে।
Be the first to comment