রাতে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য এবার রাজ্য সরকারের বিশেষ অ্যাপ ‘রাত্তিরের সাথী’

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি, কলকাতাঃ আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য থেকে দেশ। এমত পরিস্থিতি শনিবার নবান্নে নারী নিরাপত্তার বিষয়ে একটি বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাতে যেসব মহিলারা কর্মক্ষেত্রের দায়িত্বে থাকে, এবং রাতে কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফেরা মহিলা কর্মচারীদের জন্য চালু করা হচ্ছে ‘রাত্তিরের সাথী’ নামক বিশেষ মোবাইল অ্যাপ। একই সঙ্গে আরও একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
শনিবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দোপাধ্যায় বলেন, হাসপাতালে নাইট শিফটে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তায় জোর দিতে যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা যত দ্রুত সম্ভব বলবৎ করা হবে।
যে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাকঃ

১। হাসপাতাল, জেলা হাসপাতালগুলিতে নির্দিষ্ট, চিহ্নিত বিশ্রামঘর সঙ্গে শৌচালয় থাকবে।
২। রাত্তিরের সাথী নামে পুলিশের সঙ্গে মহিলা সিকিউরিটি ফোর্স রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
৩। সিসিটিভি এবং মনিটরিং করে সেফ জোন তৈরি করতে হবে।
৪। সমস্ত মহিলাদের এই অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। যাতে থাকবে অ্যালার্ম ডিভাইস, যা স্থানীয় থানা এবং কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা থাকবে। এই অ্যাপটি পুলিশ শীঘ্রই তৈরি করে দেবে।
৫। বিপদে পড়লে হেল্পলাইন নম্বর ১০০/ ১১২-এ কল করতে হবে।
৬। সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সিকিউরিটি চেক ও শ্বাস পরীক্ষা করা হবে।
৭। সমস্ত কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিশাখা কমিটি গঠন করতে হবে, যদি করা না থাকে।
৮। সমস্ত সরকারি কর্ম প্রতিষ্ঠানে এই ব্যবস্থা নিতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকেও যথাসম্ভব এই নিয়মগুলি মেনে চলার আর্জি করা হয়।
৯। একা নয়, রাতে মহিলাদের দলবদ্ধ অথবা জোড়ায় কাজ করতে হবে। কে কোথায় যাচ্ছেন তা সহকর্মীরা জানবেন।
১০। বেসরকারি সংস্থাগুলিও যাতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয় উৎসাহ দেওয়া হবে।
এছাড়াও এদিন আলাপন বাবু জানান, এছাড়াও, মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল, মহিলাদের হস্টেলগুলিতে রাতে পুলিশ পেট্রোলিং হবে। হাসপাতালের প্রতিটি ফ্লোরে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। হাসপাতালগুলিতে প্রত্যেককে আইডি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে। প্রতিটি মেডিক্যাল হাসপাতালে সিকিউরিটি অফিসার নিয়োগ করা হবে। চিকিৎসক সহ সমস্ত মহিলাদের ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। যতটা সম্ভব হয় মহিলাদের নাইট ডিউটি কম দিতে হবে। শহর এবং জেলায় মহিলা এবং পুরুষ সিকিউরিটি গার্ডদের রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার আট দিনের মাথায় এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*