কয়েকদিন আগেও পুলিশকে টার্গেট করে চালিয়েছে গুলি। জঙ্গলে লুকিয়ে কেটেছে বছরের পর বছর। কার্যত সরকার, প্রশাসনের বিরুদ্ধে চালিয়ে গিয়েছে সশস্ত্র যুদ্ধ। নিমেষেই ছবি গেল পাল্টে। বন্দুকধারী সেই মাওবাদীদের পাশে নিয়েই হকি ওয়ার্ল্ড কাপ দেখলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক।
বৃহস্পতিবার ভুবনেশ্বর কলিঙ্গ স্টেডিয়াম ছিল দর্শকদের ভিড়ে বেশ ভরাট। স্টেডিয়ামের একটি দিকে বিশাল স্টেজে দেখা গেল সেই ছবি। প্রায় ৩০ জন মাওবাদীদের সঙ্গে বসে থেলা দেখছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে প্রায় ১৬ জন মহিলা মাওবাদী। যারা কয়েকদিন আগেই আত্মসমর্পণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানাচ্ছেন, ‘সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চেয়ে মাওবাদীরা আত্মসমর্পণ করছে। তই তাদের আলাদা করার কোনও যুক্তি নেই। আমি মনে করি ওরাও আমাদের মধ্যে একজন। তাই পুলিশের নেওয়া সিদ্ধান্তে রাজি হয়ে গেলাম।’
৩০ মাওবাদীদের মধ্যে ২০ জন মালকানগিরি ও ১০ জন কোরাপুট জেলার। দুই জেলার পুলিশ সুপারের যৌথ উদ্যোগে মাওবাদীদের হকি ওয়ার্ল্ড কাপ দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়।তবে স্টেজে যে খোদ মুখ্যমন্ত্রীই হাজির তা জানত না ৩০ মাওবাদী। স্টেজে উঠতেই প্রত্যেকের সঙ্গে হাত মেলালেন নবীন পট্টনায়ক। ৩০ জনই মুখ্যমন্ত্রীর পাশের চেয়ারগুলিতে বসে পড়ে। খোশ মেজাজে উপভোগ করে হকির বিশ্বকাপ।
২০০৬ সাল থেকে ওড়িশায় চলছে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়া। বিশেষ করে কোরাপুট ও মালকানগিরির জঙ্গলে অবশিষ্ট মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী ওড়িশা প্রশাসন। ‘আত্মসমর্পণ ও পুর্নবাসন প্রকল্পে’-র আওতায় চলছে এই প্রক্রিয়া। যেখানে আত্মসমর্পনকারী মাওবাদীরা পাবে চাকরি, ঘর।
এই প্রকল্পের মধ্যেই একটি ছিল মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে সাক্ষাৎ। নবীন পট্টনায়ক বললেন, ‘আজ আমি খুব খুশি। এভাবেই অস্ত্র ছাড়ুক মাওবাদীরা। প্রশাসন তাদের পাশেই আছে।’
অবশ্য, হকি ওয়ার্ল্ড কাপের মজা কিছুটা ফিকে হয়েছে ভারতের হারে। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে ১-২ গোলে হেরেছে ভারত।
Be the first to comment