আকাশে একসঙ্গে উড়ল লাল-গেরুয়া আবির। কাস্তে হাতুড়ি আঁকা পতাকার পাশে মিছিলে হাঁটল পদ্মফুল। পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের পর প্রধান হলো সিপিএমের। আর উপপ্রধান বিজেপি-র। আর মিছিল থেকে শ্লোগান উঠল– লাল-গেরুয়া ভাই ভাই, তৃণমূলকে হারানো চাই।
পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু হতেই প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে সিপিএম-বিজেপি’র জোট কাহিনী। শুরু হয় পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর থেকে। ক্রমেই তা ছড়িয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গের জেলায় জেলায়। সেখানে আবার শুধু সিপিএম নয়। বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকও সামিল হয় এই জোটে। এ বার পাহাড়ি জেলা ঘুরে একেবারে সাগরের জেলায়। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার জয়নগরের নলগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে।
মোট আসন ছিল ১৮। নির্বাচনের ফল বেরনোর পর দেখা যায় সিপিএম জিতেছে সাতটি, বিজেপি চারটি এবং বাকি সাতটি তৃণমূল। বুধবার ছিল বোর্ড গঠন। আর সেখানেই বাম-রাম এক হয়ে হারিয়ে দিল বাংলার শাসকদলকে। প্রধান নির্বাচিত হন সিপিএমের প্রতীকে জেতা রিজিয়া সর্দার এবং উপ প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপি-র রণজিৎ পুরকাইত।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব শুরু হতেই বিভিন্ন জেলায় সিপিএম-বিজেপি আঁতাতের অভিযোগ ওঠে। নদীয়া, পুরুলিয়ার মতো জেলায় সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্যরা এই জোটে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ যায় আলিমুদ্দিনে। কিন্তু তাতেও যেই কে সেই। পর্যবেক্ষকদের মতে, সিপিএমের নেতাদের নীচু তলায় আর যে কোনও কন্ট্রোল নেই ধারাবাহিক বিজেপি-র সঙ্গে আঁতাত তার সবথেকে বড় উদাহরণ।
যদিও, জেলা সিপিএমের এক নেতা বলেন, “জয়নগরের ঘটনার খবর শুনেছি। স্থানীয় নেতাদের থেকে লিখিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” বিজেপি-র এসবে কোনও ছুৎমার্গ নেই। গেরুয়া শিবিরের সাফ কথা, ‘তৃণমূলকে হারাতে যা করতে হয় করব।”
বাম-বিজেপি জোটের কথা শুনে তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “দিদি তো কবেই বলেছিলেন, দিল্লি থেকে এল রাম-সঙ্গে জুটে গেল গেল বাম। সিপিএম-বিজেপি’র নির্লজ্জ রাজনীতি দিকে দিকে মানুষের সামনে ধরা পড়ে যাচ্ছে।”
Be the first to comment