হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রামে ফের হাসি চওড়া বিজেপির। নন্দীগ্রাম ভেকুটিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে বড় জয় পদ্ম শিবিরের। নাস্তানাবুদ হতে হল শাসক শিবির তৃণমূলকে। প্রাথমিক গণনায় এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ১২ টি আসনের মধ্যে ১১ টি নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে বিজেপি। আর তৃণমূলের ঝুলিতে মাত্র একটি আসন গিয়েছে বলেই প্রাথমিক গণনায় জানা গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ভোট অঙ্কের ফলাফল সামনে আসেনি।
নন্দীগ্রাম ভেকুটিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি হাতছাড়া হল তৃণমূলের। আর এই ভোট ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয় নন্দীগ্রামে। হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে।এই ভোট ঘিরে দিনভর উত্তেজনার পরিস্থিতি ছিল এলাকায়। বোর্ড বিজেপির হাতে যাওয়ার পরেও উত্তেজনার পরিস্থিতি অব্যাহত। তৃণমূলের ভেকুটিয়া অঞ্চল সভাপতি মধু বেরাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির মহিলা কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ক্রমেই এগিয়ে আসছে। ইতিমধ্য়েই জেলায় জেলায় চড়তে শুরু করেছে রাজনীতির পারদ। তপ্ত হচ্ছে বাতাবরণ। এরই মধ্যে ভেকুটিয়া কৃষি সমবায় উন্নয়ন সমিতির নির্বাচন ঘিরে কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল নন্দীগ্রামে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ এটিকে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘ট্রেলার’ হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন।
কিছুদিন আগেই নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের একটি সমবায় সমিতির নির্বাচনে তৃণমূলের জয় হয়েছিল। সেই সময় বিজেপিকে কার্যত এলাকা ছাড়তে হয়েছিল। এবার ভেকুটিয়ার এক সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরেও সেই একই ছবি। এলাকা ছাড়তে হল তৃণমূলকে। এদিন সকাল থেকে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর চলছিল। তৃণমূল – বিজেপি উভয় শিবির থেকে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চওড়া হাসি ফোটে বিজেপির মুখে।
এদিকে নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসার পর তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মধু বেরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে গেলে, তাঁর উপর বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী চড়াও হয় বলে অভিযোগ। সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য পুলিশ সেই পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং মধু মেরাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এদিকে ঘটনার পর কার্যত বিজয়োল্লাসে মেতেছে গেরুয়া শিবির।
নির্বাচনের বিষয়ে মধু বেরা জানিয়েছেন, “রাজনীতিতে জয়-পরাজয় আছে। কিন্তু এই দল প্রচণ্ড হিংস্র দল। মানুষকে বিদ্বেষে প্ররোচনা দিচ্ছে। পুলিশ একটু দূরে ছিল। সেই সময়েই আমার উপর হামলা করেছে।” এই নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাবেন বলেও জানান তিনি। যদিও স্থানীয় বিজেপি শিবির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না। তাঁদের কথায় এটি মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র এই বিষয়ে বলেন, “ভেকুটিয়া অঞ্চলে আমরা বিধানসভা ভোটে সাড়ে চার হাজার ভোটে পিছিয়েছিলাম। আমরা যে ১১ টিতে হেরেছি, তার ব্যবধান কোনওটিতে একটি, কোনওটিতে সাতটি, কোনওটিতে পাঁচটি। আমরা যে সমৃদ্ধ করছি, এটা ভোটে প্রমাণ হয়েছে।”
বিজেপি নেতা মেঘনাথ পাল এই বিষয়ে বলেন, “১১ টি সিটে আমরা জিতেছি। আমরা আশাবাদী ছিলাম আমরা জয়ী হব। নন্দীগ্রামের মানুষ যে বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আছেন, এটা তার থেকে প্রমাণিত হয়ে গেল। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী হবে, তাও এর থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল।”
Be the first to comment