নয়াবাদের করোনা আক্রান্ত প্রৌঢ় মারা গেলেন বুধবার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দিনকয়েক ধরেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল তাঁর। একাধিক অঙ্গ বিকল হতে শুরু করেছিল। মঙ্গলবারই পুরোপুরি ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়া হয় তাঁকে। পিয়ারলেসের প্রধান এগজিকিউটিভ, চিকিৎসক সুদীপ্ত মিত্র জানিয়েছেন, আজ বিকেলে মারা যান তিনি।
সুদীপ্ত মিত্র আরও জানিয়েছেন, কোভিড ১৯ আক্রান্ত ওই বৃদ্ধকে অনেকটা বেশি অক্সিজেন দিতে হচ্ছিল কাল থেকেই। ইউরিন আউটপুটও অনেকটা কমেছিল। বুকের এক্স-রেতে সংক্রমণের মাত্রা অনেকটাই ধরা পড়েছিল। আজ, বুধবার মেডিক্যাল বোর্ডও বসে তাঁর জন্য। ডায়ালিসিসও শুরু হয়। কিন্তু শেষমেশ একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যায় তাঁর।
জানা গেছে, এক আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে গত ১২ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা গিয়েছিলেন ৬৬ বছরের ওই প্রৌঢ়। সেখানে ১৪ মার্চ বউভাতের দিন তাঁর সামান্য জ্বর হয়। কিন্তু প্যারাসিটামল খেয়ে জ্বর কমায় ১৬ তারিখ দিঘায় যান তিনি। সেখানে ফের জ্বর বেড়ে যাওয়ায় দু’দিন পর ফিরে যান এগরাতে। সেখানে রক্ত পরীক্ষা করা হলে তাঁর টাইফয়েড ধরা পড়েছিল। তার পরেই চিকিৎসার জন্য কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে।
২৩ তারিখ পিয়ারলেস হাসপাতালে দেখাতে গেলে উপসর্গ দেখে তাঁকে আইসোলেশনে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করেন ডাক্তাররা। লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল নাইসেডে। ২৫ তারিখ নাইসেড থেকে আসা রিপোর্টে তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণের কথা জানা যায়। তিনিই বাংলার দশম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অবস্থার অবনতি হওয়ার পর থেকেই তাঁকে হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন দিতে শুরু করেছিলেন চিকিৎসকরা। দেওয়া হয় এইচআইভির ওষুধও। কিন্তু তাতেও তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। দিন চারেক আগে, শুক্রবার বিকেলের পরে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার খবর আসে। ফুসফুসের কাজ কমে যায়, বিকল হয়ে যায় কিডনিও। সেই থেকেই ক্রমে খারাপ হচ্ছিল পরিস্থিতি।
ওই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পরেই বিয়েবাড়ির সমস্ত নিমন্ত্রিতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ডাকে এগরার মহকুমা প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে দু’জন আক্রান্ত বলেও ধরা পড়েছেন। মৃতের পরিবারের আরও চার জন ব্যক্তিকে বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি করে আইসোলেশনে রেখে, লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল নাইসেডে। তাঁরা কেউ আক্রান্ত নন অবশ্য।
Be the first to comment