আশঙ্কা ছিলই। এবার তা সত্যি হল। কলকাতায় মিলল করোনাভাইরাসের নয়া স্ট্রেনের হদিশ। লন্ডন ফেরত এক যুবকের দেহে মিলেছে মারণ ভাইরাসের নয়া স্ট্রেন। বর্ষবরণের আগে কলকাতায় ব্রিটেন ফেরত যুবকের দেহে করোনার নয়া স্ট্রেনের হদিশ মেলায় সব মহলেই বাড়ছে আশঙ্কা।
অন্যদিকে, এখনও পর্যন্ত দেশে ২০ জনের শরীরে ব্রিটেনের করোনা ভাইরাসের স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, বেঙ্গালুরুর তিনটি, হায়দরাবাদের দু’টি এবং পুনের একটি নমুনায় করোনার প্রথম ‘ভ্যারিয়্যান্ট অফ কনসার্ন’-এর উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। ছয় আক্রান্তকেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। সবমিলিয়ে ১১৪ জন ব্রিটেন ফেরত করোনা পজিটিভের নমুনা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
কলকাতা মেডিকেল কলেজে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ওই যুবককে। তাঁর উপর চিকিত্সকরা প্রতি মুহূর্তে নজর রাখছেন বলে জানা গিয়েছে। এই সংখ্যাকে সামনে রেখেই অভয় দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের যুক্তি, সেপ্টেম্বরে প্রথম এই স্ট্রেনের কথা জানা যায় ব্রিটেনে। এই পর্বে বিমান পরিষেবা চালু থাকায় লক্ষাধিক যাত্রী ব্রিটেন থেকে এ দেশে এসেছেন। শুধু ব্রিটেন নয়, ইতালি, কানাডা, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফ্রান্স, স্পেন, সুইৎজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের মতো বহু দেশেই এই স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে। ফলে ভারতেও এই স্ট্রেনের ছড়িয়ে পড়া একেবারে স্বাভাবিক ঘটনা। যদিও যে স্ট্রেনকে অতি সংক্রামক বলে মনে করা হচ্ছে, সংক্রমণ-চিত্রে তার বিন্দুমাত্র প্রতিফলন দেখা যায়নি।
কেন্দ্র এ দিন জানিয়েছে, ২৫ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ৩৩ হাজার যাত্রী ব্রিটেন থেকে দেশে এসেছেন। এর মধ্যে ১১৪ জনের শরীরে করোনা পাওয়া যায়। এদের করোনাভাইরাসের জিনে চোখ রাখতে ১০টি প্রতিষ্ঠানের একটি কনসর্টিয়াম গড়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এর মধ্যে বেঙ্গালুরুর নিমহ্যান্স, হায়দরাবাদের সিসিএমবি এবং পুনের এনআইভি থেকে প্রথম ব্রিটিশ স্ট্রেনের অস্তিত্বের কথা জানা গেল।
পাশাপাশি রাত পোহালেই বর্ষবরণের উৎসব। সেখানে যাতে কোনও ভাবেই এক জায়গায় বেশি ভিড় না-হয়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্যকে অনুরোধ জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। করোনা-বিধি মেনে কোনও জায়গায় যাতে বেশি মানুষের জমায়েত না-হয়, রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের বক্তব্য, উৎসবের মরসুম শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বছর শেষে বহু মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় ভিড় হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে নজরে আসছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা-বিধি যাতে লঙ্ঘিত না-হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকে। মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক এবং স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও করতে হবে।
Be the first to comment