তাঁর লেখা উপন্যাস উঠে এসেছিল রুপোলি পর্দায়। স্বর্ণযুগের কালজয়ী বাংলা ছবি ‘মেমসাহেব’ তাঁর কলম থেকে সৃষ্ট। বৃহস্পতিবার বেলায় অমৃতলোকে পাড়ি দিলেন সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাটার্য।
এদিন বেলা ১২টা ২০ নাগাদ তাঁর টালিগঞ্জের বাসভবনে প্রয়াত হন বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভুষিত এই প্রখ্যাত সাহিত্যিক। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি। তিন পুত্র ও দুই কন্যাকে ইহজগতে রেখে প্রয়াত হলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে আগেই প্রয়াত হয়েছেন।
১৯৩১ সালে সাবেক অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দেশভাগের পরে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। প্রথম জীবনে সাংবাদিকতাই ছিল তাঁর পেশা। কলকাতায় পেশাগত জীবন শুরু হলেও দীর্ঘ ২৫ বছর দিল্লিতে সাংবাদিকতা করেছেন তিনি। ‘বিশ্বামিত্র’ নামে পত্রিকায় তিনি সাংবাদিকতা করতেন। পেশার সূত্রে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, ইন্দিরা গান্ধী, রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণের সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতা ছিল। ইন্দিরা গান্ধীর সফরসঙ্গী হয়ে বহু দেশে ঘুরেছেন তিনি। প্রথমবার রেলমন্ত্রী হওয়ার পর ১৯৯৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্যাসেঞ্জার অ্যামেনিটিস কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন।
এই পেশার দৌলতে সেসময়কার রাজনৈতিক ও বিনোদন জগতকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল তাঁর। তারই ছায়া পড়েছিল নিমাইবাবুর লেখনিতে। তাঁর গল্প-উপন্যাসে সেই সময়ের ঘটনাবলীই উঠে আসে। ১৯৬৪ সালে তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘রাজধানীর নেপথ্যে’ প্রকাশিত হয়। তারপর পুরোপুরি লেখালেখিকেই পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৮২ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন তিনি।
‘মেমসাহেব’, ‘এডিসি’, ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’, ‘গোধূলিয়া’র মতো একের পর এক উপন্যাস লিখেছেন তিনি। ১৫০টিরও বেশি উপন্যাস লিখেছেন তিনি। ১৯৭২ সালে তাঁর উপন্যাস থেকেই তৈরি হয় হয় পিনাকী মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘মেমসাহেব’। উত্তমকুমার-অপর্ণা সেন জুটি অভিনীত সেই ছবি আজও বাংলা রোম্যান্টিক সিনেমার মাইলস্টোন।
এদিন সাহিত্যিকের মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর শোকপ্রকাশ করেছে।
Be the first to comment