নিপা ভাইরাস আতঙ্কে জেরবার কেরল। ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা জারি করেছে সে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যসরকারের খবরে বলা হয়েছে গত ১২ ঘন্টায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্য শুধুমাত্র তিনজনের মৃত্যু হয়েছে নিফা ভাইরাসে। বাকিদের রক্তের নমুনা পুণের জাতীয় ভাইরাস গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। যদিও অসমর্থিত সূত্রে খবর, ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এপর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবারেই কেরালার কোঝিকর জেলায় মৃত্যু হয়েছিল একই পরিবারের তিন জনের। তখনও ভাইরাসের সঠিক পরিচয় জানা যায়নি। এরপরেই কেন্দ্রের কাছে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর আবেদন জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। সূত্রের খবর, সোমবারেই কেন্দ্রের বিশেষ প্রতিনিধি দল পাঠান হয়েছে রাজ্যে। এখন পর্যন্ত কোঝিকড় ও মালাপ্পুরম জেলায় ভাইরাস আক্রান্তের খবর মিলেছে। কিন্তু কি এই নিপা ভাইরাস? রোগটির আসল নাম হল নিপা ভাইরাস এনসেফালাইটিস। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হল এক ধরনের ছোঁয়াচে রোগ। ১৯৯৮-৯৯ সালে মালয়েশিয়ার সিঙ্গাপুরে এই রোগ প্রথম মহামারী আকারে দেখা দেয়। কয়েকটি বিশেষ প্রজাতির শুয়োরের দেহে প্রথম এই রোগের জীবানু অস্তিত্ব ধরা পরে। পরে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কুকুর, বিড়াল, ঘোড়া, ভেড়ার দেহেও এই সংক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তীকালে মানবদেহেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। যেই পরজীবী রোগটির জন্য মূলত দায়ি তা হল এক ধরনের রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড ভাইরাস। এটি প্যারামাইয়োক্সিভিরিডি গোত্রের। যার সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে বাদুড়ের লালায় উপস্থিত হিন্ড্রা ভাইরাসের। আমাদের দেশেও এই রোগের অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়ে পশ্চিমবঙ্গে ২০০১ সালে। বাংলাদেশ লাগোয়া সীমান্ত জেলাগুলিতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এখন পর্যন্ত এই রোগের ভ্যাকসিন বা ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। শুধুমাত্র উপসর্গের উপর ভিত্তি করে দেহ সংরক্ষক ওষুধ প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
Be the first to comment