মঙ্গলবারই কি বিহারের রাজনীতিতে পটপরিবর্তন হতে চলেছে? দলীয় বিধায়কদের বৈঠকের শেষে মঙ্গলবার দুপুরেই রাজ্যপাল ফাগু চৌহানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাইলেন জেডিইউ নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আর তাতেই রাজ্যের রাজনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে, সূত্রের খবর নীতীশ ছাড়াও এদিনই বিজেপির ১৬ জন মন্ত্রীই ইস্তফা দিতে চলেছেন। তাঁরাও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন। সকালেই তাঁরা রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী তারকিশোর প্রসাদের বাড়িতে এক বৈঠকে মিলিত হন।
একদিকে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল অন্যদিকে লালুপুত্র তেজস্বী যাদবের নেতৃ্ত্বাধীন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD) বিরোধী বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিল এদিন সকালেই। জেডিইউয়ের শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকের আগেই জানিয়ে দিয়েছে, বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের দিন শেষ। সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকের গোপনীয়তা বজায় রাখতে দুই দলের বিধায়কদেরই মোবাইল ফোন বাইরে জমা রেখে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও আগামী কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী তারকিশোর প্রসাদের বাড়িতে বিজেপি বিধায়করা মিলিত হন। শেষ পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে যে, রাবড়িদেবীর বাসভবনে আরজেডি’র বৈঠকেই বিরোধী দলগুলির বিধায়করাও উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যেই জেডিইউয়ের নেতা কুশওয়া বলেছেন, আজ ক্রান্তি দিবস। দেখতে থাকুন কী কী ঘটতে চলেছে। দলের আর এক বিধায়ক তো বলেই দিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার, দেখবেন সবকিছু মঙ্গলই হবে। সব মিলিয়ে বিহারের রাজনীতিতে এদিনই এনডিএ সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হতে চলেছে, তা বলাই যায়।
বেলা ১১টায় রাবড়ি দেবীর বাসভবনে মহাগাঁটবন্ধনের সব দলই উপস্থিত ছিল। সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিল কংগ্রেস। ছিলেন লিবারেশনের বিধায়করাও। তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধেই একদিন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় নীতীশ কুমার ভোল বদলে বিজেপির হাত ধরেছিলেন। কিন্তু, এদিন তাঁরই দলের বিধায়ক বিনয় চৌধুরি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, প্রয়োজন পড়লে আরজেডির সঙ্গে সরকার গঠনে তাঁদের আপত্তি নেই। নীতীশ কুমারই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন।
এই পরিস্থিতিতে একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, টালমাটাল অবস্থায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিন সকালেই নীতীশ কুমারকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু, শাহের দফতর এই খবরের সত্যতা অস্বীকার করেছে। তবে একটা বিষয় জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, বিহারে সব বিরোধী দল কংগ্রেস, আরজেডি এবং বামেরা নীতীশের পক্ষে খোলাখুলি সমর্থন ঘোষণা করেছে। কিন্তু, মহাগাঁটবন্ধনের মহাগিঁটটা খোলাই মূল কাজ। পরবর্তী উপ মুখ্যমন্ত্রী এবং আসল যে পদটি নিয়ে সমঝোতায় আসতে হবে, তা হল স্বরাষ্ট্র দফতর কাদের হাতে থাকবে। এনিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে না-পারলে গাঁটবন্ধনের শক্তিও আলগা হয়ে যাবে।
Be the first to comment