প্রত্যাশামতোই বিহারের আস্থাভোটে সহজ জয় পেলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বুধবার আস্থা ভোটের সময় বিজেপি ওয়াকআউট করে। তারপর যে ১৬০ জন বিধায়ক বিধানসভা কক্ষে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে সমর্থন করেন। ফলে কার্যত বিনা বাধায় আস্থাভোটে জয়ী হয় মহাজোট সরকার।
আস্থাভোটে মহাজোটের এই জয় অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু আস্থাভোটের আগেই এদিন বিস্তর নাটক হয়েছে পাটনায়। ভোটগ্রহণের ঠিক আগে পদত্যাগ করেন আগের সরকারের স্পিকার বিজয় কুমার সিং। বিজেপির এই নেতা জেডিইউ এবং বিজেপি জোট সরকারে স্পিকার ছিলেন। কিন্তু নীতীশ শিবির বদল করলেও তিনি ইস্তফা দিতে রাজি ছিলেন না। বাধ্য হয়ে মহাজোট সরকার তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে। এদিন সেই অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি না হয়েই পদত্যাগ করেন বিজয় চৌধুরী। ফলে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারকে আস্থা ভোট করাতে হয়।
তারও আগে বিহার, দিল্লি, এবং হরিয়ানার বিভিন্ন প্রান্তের ২৫টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। বিহারের পাটনা, কাটিহার এবং মধুবনীতে একাধিক হাই প্রোফাইল আরজেডি নেতার বাড়িতে এদিন তল্লাশি চালানো হয়। এই নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুনীল সিং, সুবোধ রাই, ডঃ ফৈয়াজ আহমেদ এবং আশফাক করিম। আস্থাভোটের ঠিক আগে এভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সক্রিয় হয়ে যাওয়া নিয়ে বিধানসভায় দাঁড়িয়েই সরব হন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। তিনি দাবি করেন, “বিজেপির তিন জামাই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্স আর সিবিআই।” তেজস্বী এদিন ঘোষণা করেছেন, “নীতীশ কুমার এবং তাঁর এই বন্ধুত্ব এবার দীর্ঘদিন চলবে। ইতিহাস তৈরি হবে। কেউ রান আউট হবে না।”
আস্থা ভোটের আগে নীতীশ নিজেও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলে দেন, তাঁর পূর্বতন জোটসঙ্গীরা আসলে প্রচার সর্বস্ব। বিহারের কথা ভাবে না। রাজ্য সরকারকে খাটো করে দেখিয়ে শুধু কেন্দ্র সরকারের প্রচার করে। নীতীশ জানিয়েছেন, তিনি আরজেডির সঙ্গে হাত মেলানোর পরই গোটা দেশের বহু নেতা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সবাই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আস্থা ভোট ভাষণে নীতীশ বলেন, ২০২৪ সালে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছি আমি।” মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আক্রমণ করতেই বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে চলে যান। তারপর বিরোধীশূন্য বিধানসভায় অনায়াসে আস্থাভোটে জয় পায় জেডিইউ।
Be the first to comment