মুখোশ শিল্পকে বাঁচাতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার

Spread the love
প্রাচীন লোক সংস্কৃতি বাঁচাতে সবসময়ই উদ্যোগী রাজ্য সরকার। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমন্ডি ব্লকের মহিষবাথান গ্রামের পরিচিতি মুখোশ শিল্পে। গমীরা, চামুণ্ডা পূজা ও বুড়া বুড়ি লোকশিল্পে মুখোশের ব্যবহার বহুল। শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে মহিষবাথানে মুখোশ তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জিওগ্রাফিকাল আইডেন্টিফিকেশন পেয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখোশ।
যদি বলা হয়, মুখোশের দেশ… ভুল হবে কি ? নাহ, দঃ দিনাজপুর বলবে, আমি বাঁচি মুখোশ নিয়েই। মুখোশেই পরিচিতি মহিষবাথানের। স্থানীয় ভাষায় যার নাম মোখা। নরসিংহ, রাক্ষস, বাঘ, কালী, চামুণ্ডারা এখানে জীবিত। শিল্পীদের নিপুণ হাতে তাঁরা বেঁচে ওঠে। বয়ে নিয়ে যায় প্রাচীন লোক সংস্কৃতি। মলিন-অমলিন গল্পগাথা। কুশমন্ডি ব্লকের মহিষবাথানের রূপ খোলে মুখোশে। মুখোশশিল্পের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন স্থানীয় দেশি পলি ও রাজবংশীরা। গমীরা, চামুণ্ডা পূজা, বুড়া বুড়ি এইধরনের লোক সংস্কৃতিতে মুখোশের ব্যবহার আদিকাল থেকেই হয়ে আসছে। তখন ব্যবহার হত শোলার মুখোশ। ৫০-৬০ বছর আগে থেকে কাঠের মুখোশের আসরে নামা। মুখোশ পুজোও প্রাচীন রীতি।
ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতর থেকে মুখোশ সমবায় সমিতির মাধ্যমে মহিষবাথানে মুখোশ তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে মুখোশ তৈরি শেখাচ্ছেন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা।
মুখোশের আড়ালে আগে আম, নিম, পাকুড়, ছাতিম কাঠ দিয়ে তৈরি হত মুখোশ হাঁড়ির কালি, সিঁদুর, চুন, সাদা খড়িমাটি বা গাছের ছাল ভিজিয়ে রং হত তেঁতুল বীজ গুঁড়ো করে পালিশ হত পোকার উপদ্রব হওয়ায় এখন গামারি কাঠ ও বাঁশ ব্যবহার ৷ এখন আধুনিক পদ্ধতিতে রং ও পালিশ
ইতিমধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখোশ জিওগ্রাফিকাল আইডেন্টিফিকেশন পেয়েছে। খুশি শিল্পীরাও। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে মুখোশ সমবায় সমিতির উন্নতি ঘটেছে। প্রান্তিক ব্লকের মুখোশ শিল্পীদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
সরকারি বিভিন্ন মেলা প্রদর্শনীতে পসরা সাজান মুখোশ শিল্পীরা। ২০১৫ সালে প্যারিসে ও ২০১৬ সালে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছে কুশমন্ডির মুখোশ । বিশ্বের দরবারে দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ হয়ে উঠেছে কুশমণ্ডির মুখোশ। অনুপ সান্যাল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*