নষ্ট মেয়ে

Spread the love

পায়েল ব্যানার্জীঃ

পিয়া কে দেখেই রিনা আড়ালে লুকিয়ে পড়লো।পিয়া রিনাকে দেখতে পেয়ে ডাকতে গেল কিন্তু,রিনা পাত্তা না দিয়ে চলে গেল।অথচ ওরা দুজনে সেই কোন ছোটোবেলা থেকে বন্ধু,দুজনে দুজনের মনের সব খবর রাখতো। একসাথে ঘুরতে যাওয়া,স্কুল যাওয়া সব প্রানের অধিক বন্ধু ছিল তারা। পিয়ার বাড়ির লোকের প্রথম থেকেই একটু আপত্তি ছিল রিনার সাথে মেশা নিয়ে কিন্তু মেয়ে শুনতো না।ধীরে ধীরে দুজনেই যৌবনে উত্তীর্ণ হলো। ক্লাসনোটের জন্য একদিন পিয়া রিনার বাড়ি গেল।রিনা তখন বাড়িতে নেই।দরজায় বেল করতেই রিনার বাবাই দরজা খুললেন।”কাকু রিনা আছে? না পিয়া রিনাতো বাড়িতে নেই,তুই ভিতরে এসে বস পিয়া এসে যাবে।কাকিমাও নেই ?নারে দুজনেই বেরিয়েছে, বাজারে গেছে,এসে যাবে এক্ষুনি, আয় ভিতরে আয়”।পিয়া ভিতরে গিয়ে বসল।রিনার বাবা পাশের ঘরে চলে গেলেন। পিয়া বসে ফোন ঘটেছিল,হঠাৎ রিনার বাবা পিয়ার দিকে এগিয়ে আসে খাবার দেবার নাম করে তারপরেই তিনি তার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দেন,”কাকু কি করছেন আমি আপনার মেয়ের বন্ধু,কত ছোট থেকে আসছি আপনাদের বাড়ি,ছাড়ুন আমাকে ছাড়ুন”।পিয়া চেঁচাতে থাকে,কিন্তু রিনার বাবা শোনেন না,পিয়ার চেঁচানো শুনে বাইরে লোক জমা হয়ে যায়,তারা রীতিমতো দরজাতে ধাক্কা দিতে থাকে কিন্তু কেউ খুলছে না,অবশেষে তারা দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে আসে,এসে দেখে সুজিতবাবু মেয়ের বন্ধু পিয়ার শ্রীলতাহানি করছেন,পাড়ার লোকজন দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে তিনি পিয়াকে ছেড়ে দিয়ে পাড়ার লোকের পা ধরে ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে যায়।পাড়ার লোকও ছাড়ার প্রার্থী নয় অবশেষে পিয়ার কথায় তারা সুজিতবাবুকে ছেড়ে দেন,এর মধ্যেই রিনা আর তার মা বাড়িতে ঢোকে,এই সব দেখে তাদের মাথা লজ্জায় নিচু হয়েযায়। কিন্তু,তারা থেমে থাকে না সুজিতবাবুকে বাঁচানোর জন্য তারা সব জায়গায় রটিয়ে বেড়ায় সেইদিন সুজিতবাবু নয় পিয়াই নাকি সুজিতবাবুর সাথে………পিয়া নষ্ট মেয়ে,সুজিতবাবু আর তার বাড়িরলোক পিয়ার নামে আজেবাজে কুকথা রটাতে থাকেন।এত বদনাম পিয়া আর তার বাড়ির লোক সহ্য করতে পারেন না তারা পিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।সেই অবস্থায় সেদিন পিয়ার পাশে কেউ দাঁড়ায় না।পিয়া নিজেও বোধশক্তি হারিয়ে নিজেকে নিয়ে যায় অন্ধকার জায়গায়,যাদের এই ধরণের সভ্য সমাজের লোকেরা বলে নষ্ট মেয়ে।একটা ভালো মেয়ের এইভাবেই নষ্ট মেয়েতে পরিণত হয়,একটি মানুষের বুড়ো বয়সের ভিমরতির জন্য। কি নাম দেব আমরা এই সমাজের?কিভাবে মুক্তি হবে এই মানসিকতার????আদৌ কি হবে নাকি চিরকাল থেকে যাবে মানুষের মধ্যে এই কুরুচিকর মানসিকতা? লজ্জা লজ্জা লজ্জা!

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*