এনআরসি নিয়ে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে জোড়া বৈঠক। আর এই বৈঠককে কেন্দ্র করেই ধুন্ধুমারকাণ্ড মতুয়া সম্প্রদায়ের ঠাকুরবাড়িতে। বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ও প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামীদের মধ্যে বুধবার রীতিমতো সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ, হেনস্থার শিকার হয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর এবং ভাঙচুর করা হয়েছে গাড়ি। আর সেই খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও।
জানা গিয়েছে, বুধবার ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ভক্তদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেন মমতাবালা ঠাকুর। ঠিক সেই একই সময় বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও এনআরসি বিষয়ে তাঁর অনুগামীদের নিয়ে ওই নাটমন্দিরেই বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেন। মমতাবালা তাঁর বৈঠকের জন্য পুলিশের থেকে আগাম অনুমতি নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। তবে শান্তনু অবশ্য সে সবের ধার ধারেননি। তাঁর অনুগামীরা বরং মঙ্গলবার বিকেলেই গাইঘাটার বিভিন্ন এলাকায় মাইকে তাঁদের বৈঠকের কথা প্রচার করেছেন।
অভিযোগ, এদিন সকাল ১০টা নাগাদ মমতাবালার অনুগামীরা নাটমন্দিরে গিয়ে দেখেন, আগে থেকেই সেখানে শান্তনুর অনুগামীরা জড়ো হয়েছেন। মমতাবালা তখন অনুগামীদের নিয়ে সেখান থেকে চলে যান। পরে কপিল স্মৃতিভবনে তাঁরা বৈঠকের তোড়জোড় শুরু করেন। ইতিমধ্যে একদল যুবক কপিলভবনে গিয়ে মমতাবালার অনুগামী তথা উদ্বাস্তু আন্দোলনের অন্যতম নেতা সুকৃতী বিশ্বাসকে ডাকেন। তাঁরা বলেন, শান্তনু ঠাকুর আপনাকে ডাকছেন। সুকৃতীবাবু ওই যুবকদের কথা শুনে শান্তনুর সঙ্গে দেখা করতে নাটমন্দিরের দিকে এগিয়ে যান।
অভিযোগ, নাটমন্দিরের প্রবেশপথের মুখে আচমকা সুকৃতীবাবুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একদল যুবক। তাঁকে মারধর করা হয়। এরপরই ছুটে আসেন মমতাবালা। অভিযোগ, তাঁকেও চুলের মুঠি ধরে আঘাত করা হয়েছে। এরপর পুলিশের মধ্যস্থতায় তখনকার মতো গোলমাল থেমে যায়। ঘণ্টা খানেক পরে মমতাবালার অনুগামীরা যখন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন শান্তনুর অনুগামীরা লাঠি নিয়ে সেই গাড়িগুলোতে হামলা চালায় বলেও অভিযোগ। সেই ছবি ক্যামেরাবন্দি করার সময়েই সংবাদমাধ্যমের উপরও বেপরোয়া হামলা চালানো হয়। ক্যামেরা কেড়েও নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মমতাবালা ঠাকুর বলেন, আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে নাটমন্দিরে আজ এনআরসি সম্পর্কিত সভা করতে চেয়েছিলাম। সেখানে শান্তনু আমাদের বৈঠক করতে দেয়নি। আমরা অন্য জায়গায় সভা করছিলাম। সেখান থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমাদের মারধর করেছে ওরা। গাড়িও ভাঙচুর করেছে। শান্তনু ঠাকুর অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, মমতা ঠাকুরের অনুগামী সুকৃতী বহিরাগত অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের সভা ভঙ্গ করতে এসেছিলেন। আমাদের লোক ওদের ওখান থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। হামলার কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
Be the first to comment