প্রায়ই হাসপাতালে রোগীর পরিজনদের হাতে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। কিছুদিন আগেই এনআরএস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছিলো। যার জেরে কর্মবিরতির পথে গিয়েছিলেন সেখানকার জুনিয়র ডাক্তাররা। এবার এই হাসপাতালেই কর্তব্যরত এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এক ফার্মাসিস্টকে মারধরের অভিযোগ উঠল।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার হাসপাতালের আউটডোরের ফার্মাসিতে ডিউটি করছিলেন ফার্মাসিস্ট জয়দেব কুণ্ডু। দুপুরে সার্জারি বিভাগের এক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি ডাক্তার ফার্মাসিতে গিয়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়া দু’টি ওষুধ চান। তখন কর্তব্যরত ওই ফার্মাসিস্ট তাঁকে জানান, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ দেবেন না। ফার্মাসিস্টদের সংগঠন প্রোগ্রেসিভ ফার্মাসিস্টস অ্যাসোসিয়েশন-এর এনআরএস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ইউনিটের সম্পাদক অরূপ পটসা বলেন, আমরা ফার্মাসিস্ট। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ না দেওয়ার বিষয়টি আইন অনুযায়ী কঠোরভাবে মেনে চলি। ডায়াবেটিসের দু’টি ওষুধ চেয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। জয়দেব কুণ্ডু প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ না দিতে চাওয়ায় তাঁর সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন তিনি।
অভিযোগ, জয়দেব কুণ্ডুর জামার কলার ধরেন ওই চিকিৎসক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অরূপবাবু। তিনি বলেন, ওই চিকিৎসককে আমি বলি, আপনি এমন আচরণ করছেন কেন? কেন গায়ে হাত দেবেন? এই আচরণের জন্য আউটডোরের ফার্মাসিস্ট ইনচার্জ ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেন ওই চিকিৎসককে। তিনি তখন বলেন, কীসের ক্ষমা ৷ তিনি ওষুধ চাইছেন, তাঁকে ওষুধ দেবেন ফার্মাসিস্ট। এরপর হাসপাতালের পুলিশ আউট পোস্টে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হয়। খবর দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
অভিযোগ, জয়দেব কুণ্ডুর জামার কলার ধরে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেন ওই চিকিৎসক । পড়ে যান জয়দেব কুণ্ডু। এরপর তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷ তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন ৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এক্স-রে, সিটি স্ক্যান করানো হয়। ভর্তি করা হয় ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে।
অরূপবাবু বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের লিখিত অভিযোগ জানানোর কথা বলেছেন। প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে করতে অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই জন্য আমরা লিখিত অভিযোগ জানাতে পারিনি। বুধবার লিখিত অভিযোগ জমা দেব। অবিলম্বে ওই চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করব।
এই অভিযোগের বিষয়ে এনআরএস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের MSVP সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। অভিযুক্ত চিকিৎসকেরও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Be the first to comment