অফিস টাইমে শিকেয় সরকারি ও বেসরকারি বাসে সামাজিক দুরত্ব। গত কয়েক দিনের তুলনায় সরকারি বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, সমান ভাবে সব রুটে বাসের সংখ্যা বাড়েনি। ফলে একাধিক রুটে বাস পেতে সেই নাজেহাল হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
অন্যদিকে বেসরকারি বাস রাস্তায় চোখে পড়ার মতো থাকলেও, সব রুটে সেই সংখ্যা বাড়েনি। ফলে নাজেহাল হতে হচ্ছে অফিস আসা ও ফেরত যাওয়া যাত্রীদের। মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা গেছে কলকাতা থেকে ডায়মন্ড হারবার, কলকাতা থেকে পুরুলিয়া, কলকাতা থেকে আরামবাগ, কলকাতা থেকে বাঁকুড়া এই সমস্ত রুটে যাত্রী প্রচুর। যদিও এই সব রুটে বাসের সংখ্যা কম ফলে যাত্রীদের ভিড় বাসে গা ঘেঁষে যাতায়াত করতে হচ্ছে। একই অভিযোগ কলকাতার যাত্রীদেরও।
বেহালা, সল্টলেক,নিউটাউন,কামালগাজি বা রুবি যাওয়ার মতো বাস নেই যথেষ্ট সংখ্যক। ফলে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। সবচেয়ে অসুবিধার সম্মুখীন অফিস পাড়ার যাত্রীরা। তাই ডালহৌসি, আর এন মুখার্জি রোড, এসপ্ল্যানেড স্টপেজে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে কিন্তু বাস নেই। ফলে আসতে দেরি, ফিরতে দেরি। এই সমস্ত রুটে যে সব বাস এই সব স্টপেজে আসছে তাতেই গা ঘেঁষে একসাথে যেতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। অনেক সময় বাস কর্মীরা তাদের নিতে রাজি না হলেও বচসা শুরু হয়ে যাচ্ছে।
যাত্রীদের অনেকেরই বক্তব্য, এই ভাবে যাওয়া যে উচিত নয় তা তারা বোঝেন, তবে উপায় নেই, তাই খানিকটা বাধ্য হয়েই এই ভাবে ঝুঁকির সফর। তথ্য বলছে, রাজ্য পরিবহন নিগম বাস চালাচ্ছে ১১৭৫ টি। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগম বাস চালাচ্ছে ৪৫০ টি। বেসরকারি বাস চলছে প্রায় ২৭০০ কাছাকাছি। আর রাস্তায় যত সংখ্যক মানুষ বেরোচ্ছে তা যে এই সংখ্যক বাস দিয়ে সামলানো সম্ভব নয় তা ভালোই বুঝেছেন দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।
তবে এই অবস্থায় সরকারি আধিকারিকরা চাইছেন পূর্ণ মাত্রায় বেসরকারি বাস নামুক। তাতে সমস্যার সমাধান হবে অন্তত। সোমবারই পরিবহণ মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন দুই বেসরকারি বাস সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তারাও ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি চাইছেন সরকার যেন রোড ট্যাক্স বা সিএফে ছাড় দেয়। তাহলে অন্তত তাদের সুবিধা হবে।
অন্যদিকে বিভিন্ন বাস সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের ভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত দাবি লিখিত আকারে জমা দিয়েছেন বাস ভাড়া নিয়ন্ত্রণের জন্যে গঠিত কমিটির কাছে। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দোপাধ্যায়ের দাবি, “বাসে আয় নেই। বাস চালু করতেই ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাক।”
মিনিবাস অপারেটর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ঘোষ জানান, “পুরনো ভাড়ায় বাস চালিয়ে আয় করা সম্ভব নয়।” একই বক্তব্য বাকি সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও। এই দাবি আর পাল্টা যুক্তির মধ্যেই যান যন্ত্রণায় নাজেহাল হয়ে পড়েছেন বাস যাত্রীরা।
Be the first to comment