রোজদিন ডেস্ক :- উত্তরবঙ্গ সফর শেষ করে কলকাতায় এসে আদিবাসী ভবনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানে গিয়ে বিরসা মুণ্ডার ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি যোগদান করেন। কলকাতা সহ রাজ্য জুড়ে পালিত হচ্ছে সার্ধ শতবর্ষ উৎসব। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
এদিন আদিবাসী অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’ আগামী প্রজন্মের কাছে বিরসা মুন্ডার অবদানের কথা তুলে ধরতেই রাজ্যের তরফে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই সবাই মিলে মিশে থাকুক। আগামী দিনে আদিবাসী উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ বাড়তে চলেছে। শুধু তাই নয় আদিবাসী পড়ুয়াদের জন্য তৈরি হবে ৩১০টি হস্টেল।’
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন,’ আগে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিত অনেকেই। তবে এখন আদিবাসীদের জমি কেউ কেড়ে নিতে পারে না। জঙ্গলে আমরা শান্তি ফিরিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই জঙ্গলের অধিকার জনজাতির হাতে থাকা উচিত। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সারনা-সারি ধর্মকে স্বীকৃতি দেওয়া।’ অন্যদিকে জন্মবার্ষিকী মঞ্চ থেকেই এদিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাতে মুখ্যমন্ত্রী তুলে দেন ধামসা, মাদল। আবার ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁদের অসামান্য কৃতিত্বের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গর্ব করে বলতে পারি আগামীদিনে এরা অলিম্পিক জিতবে।’
এদিন মমতা বলেন, রাজ্যে ২১ লক্ষ ৬২ হাজার ছাত্রছাত্রীকে স্কলারশিপ দেওয়া হয়। সাঁওতালি ভাষাকে আমরাই স্বীকৃতি দিয়েছি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে অনেক আইসিডিএস সেন্টার করা হয়েছে।’ এছাড়া বন্য অধিকার আইনের মাধ্যমে প্রায় ৪৯ হাজার আদিবাসী মানুষকে ফরেস্ট পাট্টা এবং ৮৫১ কমিউনিটি পাট্টা দেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রামে কবি সাধু রামচাদ মুর্মুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় ও নয়াগ্রামে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর নামে কলেজ করা হয়েছে।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে অনেক আইসিডিএস সেন্টার করা হয়েছে। সেলফ হেল্প গ্রুপ্রের জন্য টাকা দিয়েছি। রাজ্য স্তরে টাকা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, এখন ওরা বিনামূল্যে রেশন পায়। আগে ঠিকমতো খেতে পেত না। ১ কোটি ৬২ লক্ষের বেশি কাস্ট সার্টিফিকেট দিয়েছে আমাদের সরকার।’
একথায় বলা যায়, এদিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের যাতে উন্নয়ন হয় তা নিয়ে বেশ উদ্যোগী ভুমিকা নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর পাশাপশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকর্মী, দমকলকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, পুরকর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা করেন। ১০ দিন থেকে এই বিশেষ ছুটির সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ দিন করার কথা ঘোষণা করলেন তিনি। মমতা বলেন, ‘যাঁরা মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করেন তাঁদের যোগ্য সম্মান পাওয়া উচিত।’ প্রথমে পুলিশকর্মীদের কথা বললেও পরে এই ছুটি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দমকলকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, পুরকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি হবেন এই জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা।
Be the first to comment