নির্বাচন, রাজনীতি সব কিছু ছাপিয়ে এই মুহূর্তে দেশ জুড়ে শিরোনামে একটাই খবর, অক্সিজেনের অভাব। প্রত্যেক দিন দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে যে ছবি আসছে তা রীতিমতো উদ্বেগের। অক্সিজেনের অভাবে করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়নত।
এই অবস্থায় পরি্স্থিতি সামাল দিতে দেশের বাইরে থেকে আনা হচ্ছে অক্সিজেন, চলছে দফায় দফায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। এরই মধ্যে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা তুতিকোরিনের ‘স্টারলাইট’ খোলার অনুমোদন দিল দেশের শীর্ষ আদালত। অক্সিজেন তৈর হবে সেখানে, মঙ্গলবার এমনটাই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
বছর কয়েক আগে দূষণের জেরে এই কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ হয়। ২০১৮ তে সে্ বিক্ষোভে তামিলনাড়িতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়, তখন্ শিরোনামে আসে তুতিকোরিনের এই তামা কারখানা। সেই সময়ই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই কারখানাটি। উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে বেদান্ত গোষ্ঠীর হাতে থাকা সেই কারখানা খুলতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। তবে তামাজাত কোনও দ্রব্য সেখানে উৎপাদন করা যাবে না। শুধুমাত্র অক্সিজেন উৎপন্ন হবে সেখানে। কারখানার কাজে নজরদারি চালানোর জন্য একটি সরকারি প্যানেল তৈরির কথাও বলা হয়েছে আদালতের তরফে। কারখানার মধ্যে কতজনকে অনুমোদন দেওয়া হবে, সেটা ওই প্যানেলই ঠিক করবে।
জানানো হয়েছে চার মাসের জন্য খোলা হবে এই কারখানা। ১০ দিনের মধ্যে অক্সিজেন উৎপাদন করা সম্ভব সেখানে। আর সেই অক্সিজেন বিনামূল্যে বিতরণ করতে হবে বেদান্ত গোষ্ঠীকে। এ দিন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘দেশ জুড়ে জাতীয় বিপর্যয় চলছে। মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। স্থানীয় মানুষদের এই অবস্থায় পাশে থাকতে হবে।’ বছর তিনেক আগের সেই বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখে আদালত এ দিন বার্তা দেয়, ‘এটা একটা জাতীয় বিপর্যয়। এখন কোনও রাজনীতি চলবে না। দেশের নাগরিকদের বাঁচাতে হবে। দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে হবে।’
বেদান্ত গোষ্ঠীর এই কারখানা তামাজাত দ্রব্য উৎপন্ন হত। কিন্তু এই কারখানার জন্য আশেপাশে দূষণ ছড়াচ্ছে, আর তাতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে এলাকার মানুষ। তাই কারখানা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে মধ্যে পুলিশের গুলিতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। দূষণের কথা স্বীকার করে নেন পরিবেশবিদরা। এলাকার জলও দূষিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তাঁরা। এরপরই স্থায়ীভাবে ওই কারখানা বন্ধ করে দেয় তামিলনাড়ু সরকার। সেই কারখানায় অক্সিজেন উৎপাদনের বিষয়ে সোমবারই তামিলনাড়ুতে এ্ক সর্বদলীয় বৈঠক হয়। এরপর মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট সেই অক্সিজেন উৎপাদনের ক্ষেত্রে শিলমোহর দিল।
Be the first to comment