পলতায় গৃহবধূ খুনের ঘটনায় নয়া মোড়। ছিনতাইবাজদের গল্প ফেঁদে স্বামীই খুন করেছিলেন তাঁর স্ত্রীকে। পুলিশের জেরায়, নিজের অপরাধ স্বীকারও করেছেন তিনি।
ঘটনাটা ঠিক কী? বৃহস্পতিবার ঘোষ পাড়া রোডে রাস্তার উপর গুলি করে খুন করা হয় রাজশ্রী চট্টোপাধ্যায় নামে বছর তেত্রিশের এক তরুণীকে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী। পুলিশকে তিনি জানান, টাকা নিয়ে তাঁরা দু’জনে নতুন গাড়ি কিনতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁদের পথ আটকায় জনা কয়েক দুষ্কৃতী। আগ্নেয়াস্ত্র দেখইয়ে টাকা চায় তারা। তাঁর স্ত্রী রাজশ্রী বাধা দিলে তাকে গুলি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। টাকার ব্যাগ এবং রাজশ্রীর সোনার চেনও নাকি ছিনতাই করে নিয়েছিল ওই দুষ্কৃতীরা।
রাজশ্রীর স্বামী সুখবিন্দর সিংহ বাট পেশায় ক্যাব চালক। ব্যারাকপুরের আনন্দপুরী মিডল রোডের বাসিন্দা সুখবিন্দর প্রথমে জানিয়েছিলেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী পলতা কান্ট্রি মোটরসে স্কুটি কিনতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁদের উপর হামলা করে ছিনতাইবাজরা। পুলিশ জানিয়েছে, গোড়া থেকেই সুখবিন্দরের কথায় অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছিল। বারে বারেই বয়ান বদলাচ্ছিলেন তিনি।
নোয়াপাড়া থানায় রাজশ্রীর খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর দিদি দেবশ্রী ভট্টাচার্য। অভিযোগে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয় সুখবিন্দরকেও। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্তে নামে নোয়াপাড়া ও টিটাগড় থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরার মুখে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন সুখবিন্দর। জানিয়েছেন, স্ত্রীর নামে থাকা ফ্ল্যাট ও সম্পত্তি হাতানোর জন্যই এই খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। ওয়ান সাটার বন্দুক বা পাইপগানও জোগাড় করেছিলেন। ঘটনার দিন, স্ত্রীকে বাইকে চাপিয়ে নতুন গাড়ি কেনার নাম করে বাড়ি থেকে বার হন। অনেক ঘোরাঘুরির পর রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ইচ্ছাপুর থেকে ঘোষপাড়া রোড ধরে ব্যারাকপুরের দিকে আসতে থাকেন। বেঙ্গল এনামেলের কারখানার সামনে স্ত্রীকে বাইক থেকে নামতে বলেন সুখবিন্দর। সেখানেই খুব কাছ থেকে নিজের কাছে থাকা পাইপগান দিয়ে রাজশ্রীর মাথায় গুলি করে খুন করে। এর পরেই খুনের ঘটনাকে ধামা চাপা দিতে ছিনতাইয়ের গল্প ফাঁদে সুখবিন্দর।
পুলিশ জানিয়েছে, সুখবিন্দরের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছে।
Be the first to comment