ওই আবেদন শুনে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, মামলার রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত ওই আসনগুলির ফলাফলের গেজেট নোটিফিকেশন করা যাবে না।
অর্থাত কাল সুপ্রিম কোর্টের জানানোর কথা ওই ৩৪ শতাংশ আসনে ভোট বৈধ না অবৈধ। মামলার শুনানির শেষ দিনে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রও সে কথা বলেছিলেন। সে দিন আদালতে তিনি বলেছিলেন, “সর্বোচ্চ আদালতের সামনে প্রশ্ন ছিল, বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট কি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে? সবাইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়ার মৌলিক শর্ত কি পালন করা হয়েছে নির্বাচনে? এবং তা না হলে পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়া আদৌ বৈধ কিনা?”
সুপ্রিম কোর্টের রায় রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের পক্ষে নেতিবাচক হলে তারা কী পদক্ষেপ করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নবান্ন সূত্রের মতে, যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে সরকার ও শাসক দল। নবান্নের এক আমলার মতে, সে দিক থেকে এ দিন দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রীদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক তাতপর্যরপূর্ণ। ওই বৈঠকে পঞ্চায়েত নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। পঞ্চায়েত স্তরে আটকে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণ কী ভাবে দ্রুততার সঙ্গে করা যাবে সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তার পর পঞ্চায়েতের কাজে গতি আনতে পাঁচ জন মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই পাঁচ জন মন্ত্রী হলেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
তিন মাস ধরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কারণে উন্নয়নের কাজ থমকে রয়েছে। সেই কাজে গতি আনতে ৫ জনের মন্ত্রী গোষ্ঠী তৈরি করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মন্ত্রী গোষ্ঠীতে রয়েছেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও পূর্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার নবান্নে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে বৈঠকে ডাকা হয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর, খাদ্য ও সরবরাহ দফতর, কৃষি দফতর, কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রী ও আধিকারিকদের। এ ছাড়া, সব জেলার জেলাশাসক ও জেলা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত অতিরিক্ত জেলা শাসকদেরও বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব-সহ এই চারটি দফতরের সচিবরাও ছিলেন ওই বৈঠকে। ডাকা হয়েছিল দু-একটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আধিকারিকদের।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের প্রধান সচিব মনোজ পন্থকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনি খুব ভালো কাজ করছেন, কিন্তু আপনার দফতরের বেশ কিছু বিএলআরও বদমায়েশি করছে, সেটা দেখুন।” পাশাপাশি, রাইস মিলের দুর্নীতি নিয়ে ডিজিকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ ছাড়া, একশো দিনের কাজ নিয়ে মুখ্যসচিবকে প্রতিনিয়ত তদারকি করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রীর। শহরের পাশাপাশি গ্রাম গুলিতেও ডেঙ্গি, অজানা জ্বর মোকাবিলায় নজরদারি বাড়াতেও সংশ্লিষ্ট দফতরকে উদ্যোগী হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।।
Be the first to comment