ফের রাজ্যপালকে আক্রমণ করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের যা ভূমিকা তা আমরা এই রাজ্যে কখনও দেখিনি। আর এরকম একটা ধ্বংসাত্মক আচরণও আগে দেখা যায়নি।
১৩ জানুয়ারি উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন রাজ্যপাল। আর সেই বৈঠকে একজন উপাচার্যও যোগ দেননি। কিন্তু, ওই দিনই তৃণমূলের একটি অনুষ্ঠানে এক উপাচার্যকে দেখা যায়, শুরু হয় জল্পনা। এই নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, তৃণমূলের অনুষ্ঠান ছিল এটা একেবারেই ভুল। এটা স্টোরি তৈরি করার জন্য ভালো। আপনি যদি দেখেন, ওই অনুষ্ঠানে ধরনা মঞ্চের পুরোটায় দর্শক ছিল। ওটা একটা প্রতিবাদের সভা। লেখা ছিল নো NRC, নো CAA, নো NPR। এই যে সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন বিশিষ্ট লোক বলছেন, কাগজ দেখাব না। তাহলে কী ওঁরাও কোনও দলের হয়ে বলছেন? তা তো না। সকলে বিজেপির বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে লড়ছেন। কয়েকজন এসেছিলেন, একটা পর্ষদ না কি পরিষদ গঠিত হয়েছে উপাচার্যদের। তাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন দেখা করতে চায় বলে। আমি বলেছিলাম না, আমি এখানে বসে আছি। আমি এটা করতে পারব না। এতে তো কোনও অন্যায় নেই। আমি রাজ্যপালের সমর্থক না পার্থ চ্যাটার্জির সমর্থক এটা এই লড়াই নয়। রাজ্যপালের যা ভূমিকা আচার্য হিসেবে, তা আমরা এই রাজ্যে কোনওদিন দেখিনি। এমন একটা ধ্বংসাত্মক আচরণ আমরা কোনওদিন দেখিনি।
ডিসেম্বরে পাশ হওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যপাল কোনওভাবেই উপাচার্যদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন না। ফলে ১৩ জানুয়ারি রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত না থাকার কারণ হিসেবে এই আইনকেই দেখিয়েছেন উপাচার্যরা। এক্ষেত্রে রাজ্যপালরা আইন ভেঙেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এবিষয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা শুধু সরকারের আইন অনুযায়ী চলবো। দরকারে আরও কঠোর হব রাজ্যপালের ব্যাপারে। রাজ্যপালের ভূমিকা এখানে ভিজিটরের মতো। জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে গেলে ব্যবস্থা নেওয়াই হবে।
প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে বা সরকারি কোনও অনুষ্ঠানে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া অসাংবিধানিক। পার্থবাবু বলেন, এক উপাচার্য একটা অনুষ্ঠানে গেছেন, সেটা নিয়ে অভিযোগ করছেন। কিন্তু কত অসাংবিধানিক কাজ হয়, তা তো দেখেন না। রাজ্যপাল জনসংযোগের জন্য এখানে এসেছেন মাত্র। আপনারা তো কোনওদিন প্রশ্নই করলেন না কোনও প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে বা সরকারি মিটিংয়ে অন্য একজন থাকবে কেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে দু’জনের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু স্ত্রীকে নিয়ে সরকারি মিটিংয়ে যাওয়া তো অসাংবিধানিক। এমন কখনও পূর্বের কোনও রাজ্যপালকেই করতে দেখিনি।
উনি একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরের উপর। এই অভিযোগ তুলে পার্থবাবু আরও বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে বাদ দিয়ে উনি শিক্ষাদপ্তরের আচার্য হবেন সেটা কী হয় ? এর আগেও কেশরিনাথ ত্রিপাঠী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বসেছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। শিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধিরা ছিলেন। আমরা তো সেদিন না বলিনি। উনি তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটা শিখণ্ডি হচ্ছেন। উনি কী বুঝতে পারছেন না? আর ওঁকে একটু বাংলা শিখতে হবে। বাংলায় আসবেন, হিন্দি-ইংরেজিতে কথা বলবেন তা তো হয় না। উদ্ভট কথা যদি রাজ্যপাল বলেন, তাহলে তো লোকে হাসবে। নিজেকে হাস্যকর বানাচ্ছেন কেন ?
Be the first to comment